চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি থেকে জুন) মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে বুধবার (১৭ জানুয়ারি)। এদিন বিকেল ৩টায় মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। বছরে দু’বার মুদ্রানীতি ঘোষণার মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় পদক্ষেপ নিয়ে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক জানিয়েছেন, গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে মুদ্রানীতি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয় গত ১৩ জানুয়ারি। এরপর রোববার (১৪ জানুয়ারি) বোর্ড সভায় চলতি বছরের (২০২৪ সাল) ছয় মাসের মুদ্রানীতির খসড়া অনুমোদন করে। এ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
মুদ্রানীতি ঘোষণা অনুষ্ঠান সভায় সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের জন্য ঘোষিত সংকোচনমুখী মুদ্রানীতির ধারাবাহিকতা দ্বিতীয়ার্ধেও রাখার সম্ভবনা আছে। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় সুদহার আরো বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে। এরমধ্যে নীতি সুদহার, রেপো, রিভার্স রেপোর মতো মুদ্রানীতির মৌলিক সুদ কাঠামোগুলোও অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। একই সাথে ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) নির্দেশিত নীতি অনুসরণের ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্বতিতে ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা আসতে পারে। আর বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১১ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে।
সূত্র আরো জানায়, এবারের মুদ্রানীতির অন্যতম লক্ষ্য থাকবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। ফলে চলমান সব ধরনের নীতিতে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। এছাড়া মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যেসব সংকোচনমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলো চলমান থাকবে। মূলত অর্থনীতির সামগ্রিক সূচকগুলো পর্যালোচনা করে মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা হচ্ছে।
এদিকে ২০২৩ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতির হার সর্বোচ্চ ৮ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এজন্য ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৯ শতাংশের সীমা তুলে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু গত ছয় মাসে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১১.৮৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। সরকারের ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদহারও বেড়ে প্রায় ১২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে মুদ্রানীতিতে ব্যাংক ঋণের সুদহার বাড়বে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যে সর্বশেষ গত বছর জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৮.৫৭ শতাংশ। নভেম্বরে দেশে গড় মূল্যস্ফীতির হার ৯.৪৯ শতাংশ তুলে ধরা হয়েছে। এর আগে অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি ৯.৯৩ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছিল।
এছাড়া চলতি বছরের জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য রয়েছে।
