ঢাকা
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

ভারতের নিষেধাজ্ঞা

প্রথম দিনেই বেনাপোল দিয়ে ৫০ শতাংশ রপ্তানি কমেছে 

আপডেট : ২০ মে ২০২৫, ০২:২০ এএম

বাংলাদেশি গার্মেন্টসসহ ৬ ধরনের পণ্য আমদানিতে ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় প্রথম দিনেই বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে রফতানি কমে এসেছে ৫০ শতাংশ। এভাবে বার বার নিষেধাজ্ঞায় দেশের রফতানি খাতে একের পর এক আঘাত আসছে। গত এক মাসে রফতানিতে পর পর দুবার নিষেধাজ্ঞা আসায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন দুই দেশের ব্যবসায়ীরা বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

রোববার (১৮ মে) সবশেষ ভারতে রফতানির পরিমাণ ছিল ১০৮ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য। তবে আগের দিন শনিবার (১৭ মে) রফতানি হয়েছিল ২২৮ ট্রাক পণ্য।

এ দিকে আটকে পড়া গার্মেন্টসের কোনো ট্রাক রোববার ঢুকতে পারেনি ভারতে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা প্রায় শতাধিক ট্রাক পণ্য রফতানিতে অনিশ্চয়তায় শেষ পর্যন্ত বেনাপোল বন্দর থেকে ফিরতে শুরু করেছে। 

বাণিজ্য সংশিষ্টরা জানান, প্রতিবছর ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য হয়ে থাকে। এর মধ্যে প্রায় ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য ভারত থেকে আমদানি হয় আর মাত্র ২ মার্কিন বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি হয় ভারতে। দেশে ২৪টি স্থলবন্দরের মধ্যে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য হয় ১৬টি বন্দরের সঙ্গে। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য হয় ভারতের সঙ্গে।

স্বাভাবিক সময়ে বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২০০ থেকে ২৫০ ট্রাক পণ্য রফতানি হয়। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক থাকে গার্মেন্টস শিল্পের তৈরি পোশাক। ছাত্র-জনতা আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এরপর থেকে দেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা ও ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যে নানান প্রতিবন্ধকতা দেখা যায়। গত ৮ এপ্রিল ভারতের নিষেধাজ্ঞায় সড়ক পথে বন্ধ হয় ভারতের বিমান বন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে গার্মেন্টস রফতানি।

এর এক মাস যেতে না যেতে ১৭ মে একটি প্রজ্ঞাপনে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্টস শিল্পের তৈরি পোশাক, সুতা, প্লাস্টিক, কাঠের তৈরি পণ্য এবং ফল ও ফল জাতীয় পণ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত। তবে সড়ক পথে রফতানি সেবা বন্ধ করলেও কলকাতা ও নব সেবা সমুদ্র বন্দর দিয়ে রফতানির ব্যবস্থা থাকলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা কঠিন ও ব্যয়বহুল হওয়ায় রফতানিতে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ কম।

নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি পুনরায় বিবেচনায় নিয়ে বাণিজ্য সহজ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন ব্যবসায়ীরা।

রফতানি পণ্যবাহী ট্রাকচালক কামরুল জানান, আটকে পড়া রফতানির পণ্য নিয়ে তিনি দুদিন ধরে বিপাকে পড়েছেন।  তবে আবার অনেকেই ট্রাক নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন ঢাকায়।

বেনাপোল আমদানি, রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, গত ১৭ মে ভারত সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অজয় ভদ্র স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্টস, তুলা, সুতির বর্জ্য, কাঠ ও প্লাস্টিক ও কাঠের তৈরি আসবাবপত্র, ফল জাতীয় পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে বাণিজ্য সহজ করার দাবি জানান তিনি।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের দফতর সম্পাদক মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম জানান, হঠাৎ নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তের কারণে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক দুর্বল হচ্ছে। এতে দুই দেশের ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে।

MMS
আরও পড়ুন