অধিকৃত ফিলিস্তিন অঞ্চলে নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ফ্রানচেসকা আলবানিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। সম্প্রতি তিনি গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা নিয়ে নতুন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। এতে এমন অনেক প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যারা ফিলিস্তিনি জনগণকে বাস্তুচ্যুত করা ও গাজায় চলমান গণহত্যায় ইসরায়েলকে সহায়তা করছে। তাদের এই কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল।
বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন। তাঁর অভিযোগ, আলবানিজ যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক যুদ্ধ চালাচ্ছেন।
ফ্রানচেসকা আলবানিজ দখলকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে জাতিসংঘের বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ইসরায়েলের মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধে পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যে কয়েকজন জোরালো দাবি জানিয়েছেন তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম।
দীর্ঘদিন ধরেই ইসরায়েল ও দেশটির মিত্ররা আলবানিজের কঠোর সমালোচনা করে আসছে। তারা তাঁকে জাতিসংঘের দায়িত্ব থেকে অপসারণেরও দাবি জানাচ্ছে।
বুধবার এক বিবৃতিতে আলবানিজ অভিযোগ করেন, গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে অভিযুক্ত করেছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও ইউরোপের দেশগুলো তাকে নিজেদের আকাশসীমা ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে সহায়তা করছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ফ্রানচেসকা আলবানিজ লিখেছেন, ‘ইতালি, ফ্রান্স ও গ্রিসের নাগরিকদের এটা জানা উচিত যে, আন্তর্জাতিক আইনশৃঙ্খলা লঙ্ঘন করে নেওয়া প্রতিটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ তাদের সবাইকে ঝুঁকিতে ফেলে ও দুর্বল করে দেয়।’
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, আইসিসিতে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্য আলবানিজের প্রচেষ্টাই তাঁর ওপর নিষেধাজ্ঞার আইনি ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন। ওই আদেশে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে কাজ করা আইসিসি কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিধান রাখা হয়। গত মাসেই ট্রাম্প প্রশাসন আইসিসির চারজন বিচারকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
গত নভেম্বরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও দেশটির সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আইসিসি। মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
