ইউক্রেনে আগ্রাসনের জেরে রাশিয়ার তেল-গ্যাস বাণিজ্যের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। প্যাকেজের আওতায় রাশিয়া থেকে ইইউরোপীয় দেশগুলোতে গ্যাস সরবরাহকারী নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইন থেকে আমদানি নিষিদ্ধ এবং রুশ তেল রপ্তানির ওপর আরও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) নতুন নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ ঘোষণা করেন ইইউর পররাষ্ট্র নীতি প্রধান কাজা ক্যালাস।
এক এক্স বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমরা ইউক্রেনের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছি। ইইউ রাশিয়ার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজগুলোর মধ্যে একটি অনুমোদন করেছে। এর মাধ্যমে নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস আমদানি নিষিদ্ধ করা হবে। এছাড়াও রুশ তেলের দাম কমানো হবে এবং রাশিয়ার সামরিক শিল্পকে সহায়তাকারী চীনা ব্যাংকগুলোর ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে।’
ক্যালাস আরও বলেন, এই প্যাকেজে রাশিয়ার তেল বিক্রির তথাকথিত ছায়া বহরের সঙ্গে যুক্ত আরও ১০৫টি জাহাজের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ক্রেমলিনের যুদ্ধ বাজেট আরও কমাতে কাজ করছি এবং এই প্রক্রিয়া চলতেই থাকবে, যাতে মস্কোর নিজেই আগ্রাসন বন্ধ করতে বাধ্য হয়।’
নতুন নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজকে স্বাগত জানিয়েছেন ইইউ নেতারা
ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট অ্যান্তোনিও কস্তা এক এক্স বার্তায় বলেছেন, নতুন পদক্ষেপগুলো রাশিয়ার যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ক্ষমতাকে ‘পঙ্গু’ করার চলমান প্রচেষ্টার অংশ। ইউক্রেনে ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তির প্রতি আমাদের সমর্থন অটল।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেইন সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞাগুলোকে ‘রাশিয়ার যুদ্ধযন্ত্রের হৃদয়ে আঘাত বলে বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘চাপ চলছে। রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই যুদ্ধ শেষ না করা পর্যন্ত এটি অব্যাহত থাকবে।’
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জও এই নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অর্থায়ন অব্যাহত রাখায় রাশিয়ার ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেবে। আমরা রাশিয়ার ওপর চাপ অব্যাহত রাখছি।’
ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন-নোয়েল ব্যারোট বলেছেন, প্যাকেজটি এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্যারিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়ে আমরা ভ্লাদিমির পুতিনকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে বাধ্য করব।’
চীনের প্রতিক্রিয়া
ইইউর ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়ায় ইউকে নিষেধাজ্ঞা পুনরায় বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে চীন।
বেইজিংয়ে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান সাংবাদিকদের বলেন, ‘চীন সর্বদা একতরফা নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে, যা আন্তর্জাতিক আইন বা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ (নিরাপত্তা পরিষদ) সমর্থিত নয়।’
লিন জোর দিয়ে বলেন, ‘চীন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পক্ষগুলোকে কখনও প্রাণঘাতী অস্ত্র সরবরাহ করেনি। আমরা ইউরোপীয় পক্ষকে অনুরোধ করছি যে তারা যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া চীনা কোম্পানিগুলোর বৈধ স্বার্থকে ক্ষুণ্ন না করে।’
সূত্র: আনাদোলু
