পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে নতুন ক্ষমতা দেওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে দেশটির সংসদ। তাকে গ্রেপ্তার ও বিচার থেকে আজীবন দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সই হওয়া ২৭তম এই সাংবিধানিক সংশোধনীটি দেশের শীর্ষ আদালতগুলোর পরিচালনা পদ্ধতিতেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনবে।
এই পরিবর্তনের পক্ষের ব্যক্তিরা বলছেন, এটি সশস্ত্র বাহিনীকে একটি সুস্পষ্ট প্রশাসনিক কাঠামো দেবে এবং আদালতগুলোর মামলাজট কমাতে সাহায্য করবে।
পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তানের রাজনীতিতে সামরিক বাহিনী দীর্ঘদিন ধরেই প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করে আসছে। কখনও অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরাসরি ক্ষমতা দখল করেছে, আবার কখনও পর্দার আড়াল থেকে ক্ষমতার কলকাঠি নেড়েছে। পাকিস্তানের ইতিহাসে বেসামরিক স্বায়ত্তশাসন এবং জেনারেল পারভেজ মোশাররফ ও জেনারেল জিয়া-উল-হকের মতো সামরিক নেতাদের প্রকাশ্য নিয়ন্ত্রণের মধ্যে ক্ষমতার পালাবদল ঘটেছে। বিশ্লেষকরা বেসামরিক ও সামরিক শক্তির এই ভারসাম্যকে 'হাইব্রিড শাসন' বলে থাকেন। অনেকেই এই সংশোধনীকে সামরিক বাহিনীর দিকে ক্ষমতার ভারসাম্য ঝুঁকে পড়ার একটি বড় লক্ষণ হিসেবে দেখছেন।
'আমার কাছে এই সংশোধনীটি সর্বশেষ এবং সম্ভবত সবচেয়ে শক্তিশালী ইঙ্গিত যে, পাকিস্তান এখন হাইব্রিড নয়, বরং পোস্ট-হাইব্রিড ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে,' বলেন ওয়াশিংটনের উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান।
সর্বশেষ এই সংশোধনীর ফলে ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে সেনাপ্রধানের দায়িত্বে থাকা আসিম মুনির এখন থেকে পাকিস্তানের নৌ ও বিমান বাহিনীকেও তত্ত্বাবধান করবেন। তার ফিল্ড মার্শাল পদ এবং ইউনিফর্ম আজীবনের জন্য বহাল থাকবে। এমনকি অবসরের পরেও প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে বিভিন্ন 'দায়িত্ব ও কর্তব্য' দেওয়া হবে।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস অব পাকিস্তান (এপিপি) প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, আধুনিক যুদ্ধের চাহিদা মেটাতে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর বৃহত্তর সংস্কার কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই পরিবর্তনগুলো আনা হয়েছে।
তবে মানবাধিকারকর্মী এবং সাংবাদিক মুনিজা জাহাঙ্গীর বলেন, 'সামরিক ও বেসামরিক লোকদের মধ্যে কোনো ভারসাম্য নেই। তারা ক্ষমতার ভারসাম্য আবার সামরিক বাহিনীর দিকে ঝুঁকিয়ে দিয়েছে এবং এমন এক সময়ে সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করেছে যখন তাদের লাগাম টেনে ধরা দরকার ছিল।'
সূত্র: বিবিসি
পাকিস্তানে আতশবাজি কারখানায় বিস্ফোরণে নিহত ৪
ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিধসে ৬ জনের মৃত্যু