মিয়ানমারে সশস্ত্র সংঘাতের কারণে ৩৫ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) জাতিসংঘ এ তথ্য জানিয়েছে। মিয়ানমারের মানবিক সংকট আরও তীব্র হতে পারে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি। খবর এএফপি’র।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা ওসিএইচএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই সংঘাত এখন দেশটির সীমান্ত ও অধিকাংশ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। যার ফলে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ তাদের বাড়ি থেকে নিরাপত্তা ও মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য পালাতে বাধ্য হয়েছে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে এক বছরে ৩৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। যা আগের বছরের থেকে ১৫ লাখ বেশি।
গত ১৬ ডিসেম্বরের তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারের গত বছর মোট ৫ কোটি ৭০ লাখ জনসংখ্যার ৬ শতাংশের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অর্থাৎ সাড়ে ৩৫ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় এক তৃতীয়াংশ শিশু। গত বছরের শেষ দিকে বিমান হামলা, ড্রোন হামলা, গোলাবর্ষণ, অভিযান ও নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, সংঘাত, বিপর্যয়, মহামারি, বিস্ফোরক অস্ত্র ও অর্থনৈতিক পতনের কারণে চলতি বছর দেশটিতে আরো ‘ভয়াবহ’ অবস্থা বিরাজ করবে। এ বছর দেশটিতে জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ বা প্রায় ২ কোটি মানুষের জরুরি সহায়তা প্রয়োজন হতে পারে।
সম্প্রতি দেশটির হালনাগাদ আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে মিয়ানমারের জন্যসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ১৩ লাখে। ২০১৪ সালে আগের আদমশুমারিতে যা ছিল ৫ কোটি ১৫ লাখ। ১০ বছরের ব্যবধানে দেশটিতে জনসংখ্যা কিছুটা কমেছে। তবে এ দুই আদমশুমারির কোনোটিতেই রোহিঙ্গা মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
চলতি বছর নির্বাচনের লক্ষ্য নিয়ে গত বছরের অক্টোবরে এই আদমশুমারি করে জান্তা সরকার। তারা জানিয়েছে, চলমান অস্থিরতা ও সংঘাতের মধ্যেএই আদমশুমারি চালানো হয়েছে। তবে আদমশুমারির ফলাফলকে ভুয়া বলে ব্যাপকভাবে এটির নিন্দা জানিয়েছেন জান্তাবিরোধীরা।
২০২১ সালের অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর থেকে মিয়ানমারে বিভিন্ন জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও সেনাবাহিনীর মধ্যে লড়াই চলছে। গোষ্ঠীগুলো মূলত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন ও মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াই করছে।
