ভারতের মধ্যাঞ্চলীয় ছত্তিশগড় রাজ্যে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী মাওবাদীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। ওই সংঘর্ষে অন্তত ১২ মাওবাদী বিদ্রোহী ও পুলিশের তিন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) ছত্তিশগড়ের বিজাপুর-দান্তেওয়াড়া জেলা সীমান্তের গভীর বনাঞ্চলে মাওবাদী বিদ্রোহীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটেছে। খবর এএফপির।
ফরাসি বার্তা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছত্তিশগড়ে মাওবাদী গেরিলাদের দমনে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর বড় ধরনের অভিযানের মাঝে সংঘর্ষে পুলিশের তিন কর্মকর্তাসহ ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
দুই সপ্তাহ আগে ছত্তিশগড়ের একই এলাকায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালিয়ে মাওবাদী বিদ্রোহীদের শীর্ষ নেতা মাদভি হিদমা, তার স্ত্রী এবং আরও চারজন যোদ্ধাকে হত্যা করে।
আগামী বছরের মার্চের মধ্যে মাওবাদী বিদ্রোহ পুরোপুরি নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সর্বাত্মক অভিযান শুরু করেছে নয়াদিল্লি।
গেরিলারা কয়েক দশক ধরে চলা সশস্ত্র বিদ্রোহ স্থগিতের ঘোষণা দেওয়ার পরও নিরাপত্তা বাহিনীর এই অভিযান চলছে।
বুধবার গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ছত্তিশগড়ের দুর্গম বনাঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনী ওই অভিযান পরিচালনা করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ছত্তিশগড় পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সুন্দররাজ পাট্টিলিঙ্গম বলেন, বিজাপুর-দান্তেওয়াড়া সীমান্তের সংঘর্ষস্থল থেকে ১২ মাওবাদী বিদ্রোহীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশের তিন কর্মকর্তা নিহত ও দু’জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
মাও বিদ্রোহীরা ভারতের খনিজ-সমৃদ্ধ মধ্যাঞ্চলীয় ওই রাজ্যের প্রান্তিক আদিবাসীদের অধিকারের জন্য বছরের পর বছর ধরে সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। চীনা বিপ্লবী নেতা মাও সেতুংয়ের কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৬৭ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করেন ভারতের মাওবাদী বিদ্রোহীরা।
আদিবাসী অধিকার বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর পক্ষে লড়াইয়ের দাবি করা মাওবাদীরা নকশাল নামেও পরিচিত। ২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ভারতে মাওবাদীদের বিদ্রোহ চরমে পৌঁছায়। ওই সময় দেশটির প্রায় এক তৃতীয়াংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ ১৫ থেকে ২০ হাজার মাওবাদী যোদ্ধার হাতে ছিল।
দুই মাস আগে মাওবাদীরা তাদের সশস্ত্র সংগ্রাম স্থগিত করার এবং সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেন। গত কয়েক সপ্তাহে প্রায় ৩০০ মাওবাদী যোদ্ধা আত্মসমর্পণ করেছেন।
১৯৬৭ সালে কয়েকজন গ্রামবাসীর সামন্তপ্রভুদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত ১২ হাজারের বেশি বিদ্রোহী, সেনা সদস্য ও সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছেন।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত বছরের সেপ্টেম্বরে মাওবাদী বিদ্রোহীদের ‘আত্মসমর্পণ’ অথবা ‘সর্বাত্মক হামলার’ মুখোমুখি হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছিলেন।
গাজায় এখনো চলছে ইসরাইলি হামলা, নিহত আরও ৭
কারাগারে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ ইমরান খানের