ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

লামায় ত্রিপুরা পল্লীতে হামলার এখনো বিচার হয়নি: জনসংহতি সমিতি

‘২০২৪ সালে  ২০০টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে এবং এসব ঘটনায় ৬,০৫৫ জন জুম্ম (পাহাড়ি) মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছে। এতে ২১ জনকে হত্যা এবং ১১৯টি বাড়ি ও দোকান অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়েছে।’

আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:৫৭ পিএম

বান্দরবানের লামা উপজেলার ত্রিপুরা পল্লীতে হামলার এখনো বিচার হয়নি বলে অভিযোগ করেছে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি।

বুধবার (১ জানুয়ারি) সংগঠনটির তথ্য ও প্রচার বিভাগের সহ-সম্পাদক সজীব চাকমার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।

জনসংহতি সমিতির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘২০২৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের নাজুক সামগ্রিক পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। বরঞ্চ সার্বিক পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটেছে। ২০২৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি সাধিত হয়নি। উপরন্তু পার্বত্য চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম (পাহাড়ি) স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রম অধিকতর জোরদার হয়েছে।’

‘২০২৪ সালে সবচেয়ে নৃশংস ও লোমহর্ষক ঘটনা হলো সেপ্টেম্বরে জুম্ম জনগণের উপর নৃশংস সাম্প্রদায়িক হামলা, অগ্নিসংযোগ ও হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হওয়া এবং ডিসেম্বরে লামায় ত্রিপুরাদের ১৭টি বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে না হতেই এই নৃশংস সাম্প্রদায়িক হামলা সংঘটিত হয়। পূর্বের সাম্প্রদায়িক হামলাগুলোর মতো ওই সাম্প্রদায়িক হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের কাউকেই আইনের আওতায় আনা হয়নি এবং এ ঘটনার যথাযথ বিচার নিশ্চিত করা হয়নি।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনের ফলে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে এবং এরপর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। গণ-অভ্যুত্থানের মূল স্পিরিট ছিল বৈষম্যমূলক ব্যবস্থার মূলোৎপাটনের লক্ষ্যে রাষ্ট্র ব্যবস্থার সংস্কার। সেই রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকার ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের বেলায় পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিরোধী এবং জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থী রাষ্ট্রীয় নীতির কোন পরিবর্তন ঘটেনি।’

‘ফলে পূর্বের সরকারগুলোর মতো বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও জুম্ম জনগণের উপন দমন-পীড়ন, ভূমি বেদখল ও উচ্ছেদ, সাম্প্রদায়িক হামলা ও অগ্নিসংযোগ, অনুপ্রবেশ, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলনরত জুম্ম জনগণকে ‘সন্ত্রাসী’, ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’, ‘অবৈধ অস্ত্রধারী’ হিসেবে তকমা দিয়ে ক্রিমিনালাইজ করা, জুম্ম নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা ইত্যাদি মানবতা বিরোধী কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণ চরম অনিশ্চয়তা, আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিনাতিপাত করতে বাধ্য হচ্ছে।’

বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করে বলা হয়, ‘২০২৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত নিরাপত্তা বাহিনী, সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী গোষ্ঠী, মুসলিম বাঙালি সেটেলার ও ভূমিদস্যুদের দ্বারা ২০০টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে এবং এসব ঘটনায় ৬,০৫৫ জন জুম্ম মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছে। এতে ২১ জনকে হত্যা এবং ১১৯টি বাড়ি ও দোকান অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়েছে। এছাড়া বহিরাগত কোম্পানী, প্রভাবশালী ব্যক্তি ও সেটেলার কর্তৃক ২,৩১৪ একর ভূমি বেদখল করা হয়েছে।’

NC
আরও পড়ুন