৪১ শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করলেন শিক্ষক, সাংবাদিকদের হাতুড়ি পেটা

আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৫, ০৭:০৩ পিএম
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ক্লাসে পড়া বুঝতে না পেরে শিক্ষক পরিবর্তনের দাবি করায় সপ্তম শ্রেণির প্রায় ৪১ শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অন্তত ৪ শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
 
সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেলে জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। পরে অভিভাবকদের অভিযোগে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুরে গণমাধ্যমকর্মীরা খোঁজ নিতে গেলে শিক্ষকদের উস্কানিতে সাংবাদিকদের উপর শিক্ষার্থীদের হামলার ঘটনা ঘটে। তারা হাতুড়ি ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে বেশ কয়েকজনকে গুরুতর আহত করে।
 
স্থানীয়রা জানান, গত বছর ৫ আগস্টের পর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাছির উদ্দিন বাচ্চুর আপন ভাগিনা তানভীর আহমেদ মুন্নাকে অফিস সহকারি হিসেবে অবৈধভাবে নিয়োগ দেন। মুন্না সাম্প্রতিক সময়ে সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান ক্লাস নিতে শুরু করেন। শিক্ষার্থীরা তার পড়ানো বুঝতে না পেরে প্রধান শিক্ষকের কাছে তাকে পরিবর্তনের আবেদন করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মুন্না ক্লাসে উপস্থিত প্রায় ৪১ শিক্ষার্থীকে লাঠি দিয়ে মারধর করেন। মারধোরে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তাসনিম, কেয়া, তাবাসসুম, মীমসহ কয়েকজন।
 
আজ সকালে আহত শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও স্থানীয়রা বিদ্যালয়ে এসে প্রধান শিক্ষকের কাছে বিচার দাবি করেন। খবর পেয়ে ছুটে আসেন গণমাধ্যমকর্মীরা। এ সময় অন্তত ৩ জন শিক্ষক সাধারণ শিক্ষার্থীদের উস্কানি দিলে পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে। প্রায় শতাধিক ছাত্র লাঠিসোটা হাতুড়িসহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সাংবাদিকদের উপর ঝাপিয়ে পরে।
 
এতে রুপালী বাংলাদেশ পত্রিকার প্রতিনিধি রাকিবুল ইসলাম, একাত্তর টিভির ভিডিও জার্নালিষ্ট হাফিজুর রহমান, প্রাইম টিভির সাকের আহমেদ, অভিভাবক ওমেদ আলী, সাংবাদিকদের গাড়ি চালক ইকবার হোসেনসহ বেশ কয়েকজন গুরুতর জখম হয়। এদের মাঝে রাকিবকে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে র‍্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে এলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
 
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবায়দুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শিক্ষার্থীদের কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করেন।
 
অপরদিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিক নূরে আলম, ঘটনায় জড়িত শিক্ষক মুন্নাকে বিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিস্কার এবং সাংবাদিকদের হামলায় উস্কানির অভিযোগে আরো ৩ জনকে সাময়িক বহিস্কার ও অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের কারন দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন দাবি করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থার আশ্বাস দেন।
 
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক তানভীর হোসেন মুন্না পলাতক রয়েছেন। অভিভাবকরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
NJ
আরও পড়ুন