ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের খসড়া সীমানা নির্ধারণ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) শুনানিতে গত রোববার (২৪ আগস্ট) ঘটে যাওয়া মারামারির ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে ইসি। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
তিনি বলেন, ঘটনার পর আমরা পুলিশকে অবহিত করেছি এবং কমিশনের পক্ষ থেকে স্বপ্রণোদিতভাবে থানায় জিডি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটি কোনো পক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে করা হয়নি।
ইসির উপসচিব ও প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত শুনানিতে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও হাতাহাতির ঘটনার প্রেক্ষিতে গত ২৪ আগস্ট থানায় জিডি করা হয়। যদিও জিডিতে অভিযুক্ত হিসেবে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।
২৪ আগস্টের শুনানিতে বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার নেতৃত্বে একটি পক্ষ এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। শুনানির একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছে এবং হাতাহাতি শুরু হয়।
পরবর্তীতে ইসির কর্মকর্তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং শুনানি স্থগিত করে সংশ্লিষ্টদের শুনানি কক্ষ ত্যাগের অনুরোধ জানান।
শুনানি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে রুমিন ফারহানা বলেন, আমার বিপক্ষে যারা এসেছে, তারা গুন্ডা-পান্ডা নিয়ে এসেছে। চাইলে আমিও আনতে পারতাম। আমি একজন মহিলা, যখন আমাকে ধাক্কা দেওয়া হয়েছে, তখন আমার লোকজনও প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। এটি স্বাভাবিক।
তিনি আরও বলেন, একজন পাঞ্জাবি পড়া লোক আমার গায়ে হাত তুলেছে। পরে আমার লোকজন শুধু প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। যিনি মারার অভিযোগ করছেন, তিনি কোন দলের, তা-ও স্পষ্ট না।
অন্যদিকে এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ সংবাদ সম্মেলন করে রুমিন ফারহানা ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, শুনানির সময় আমাকে টেনে-হিঁচড়ে বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। পরে ভেতরে ঢুকলে রুমিন ফারহানা ধাক্কা দেন এবং তার অনুসারীরা আমাকে মারধর করে।
তিনি আরও দাবি করেন, তার সঙ্গে থাকা আরও দুজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন এবং পুরো ঘটনাটি নির্বাচন কমিশনের সিসিটিভিতে ধারণ করা হয়েছে।
আতাউল্লাহ বলেন, এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হলে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ করা উচিত। তিনি ইসির সিনিয়র সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগও জমা দিয়েছেন।
উভয় পক্ষই ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে ইসিকে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন সেই ফুটেজ প্রকাশ করেছে কি না তা জানা যায়নি।
ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে এটি একটি আলোচিত ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন কী পদক্ষেপ নেয়, সেটি এখন সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
ইসিতে রুমিন ফারহানার অনুসারী ও এনসিপির নেতাকর্মীদের হাতাহাতি
১৫ বছর লড়ে এখন নিজ দলের কর্মীদেরই ধাক্কা খাই: রুমিন ফারহানা