ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

নাটকীয়তা ছড়ানো ম্যাচে হাসলো বাংলাদেশ

আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৪৮ এএম

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য সম্ভবত এটাই-একটা ম্যাচ কখন, কীভাবে মোড় নেয়, কেউ জানে না। শারজাহতে আজ ঠিক এমনই এক নাটক মঞ্চস্থ করল বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। শুরুতে চোখ ধাঁধানো ব্যাটিং, মাঝপথে ঘূর্ণির ফাঁদে ধস, আর শেষটায় ধৈর্য আর সাহসে গড়া জয়—সব মিলিয়ে ম্যাচটা যেন ক্রিকেটীয় রূপকথার মতোই ছিল।

বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয় পেয়েছে আফগানিস্তানের বিপক্ষে, ৮ বল হাতে রেখেই। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে এগিয়ে গেল ১-০ তে।

১৫২ রানের লক্ষ্যটা এমন কিছু নয়, যা টাইগারদের জন্য পাহাড়সম। তানজিদ হাসান ও পারভেজ হোসেন ইমন মিলে সেই কাজটাকে আরও সহজ করে দিয়েছিলেন। মাত্র ১১ ওভারের মাথায় স্কোরবোর্ডে উঠে যায় ১০৯ রান, কোনো উইকেট না হারিয়ে। দুই ওপেনারই খেলেন দায়িত্বশীল ও আগ্রাসী ইনিংস-ইমন করেন ৩৭ বলে ৫৪, তানজিদ ৩৭ বলে ৫১।

ম্যাচটা তখন বাংলাদেশের পকেটে ভরে গিয়েছিল বলেই মনে হচ্ছিল। কিন্তু এটাই তো টি-টোয়েন্টির শ্বাসরুদ্ধকর বাস্তবতা। রশিদ খান নামলেন আক্রমণে আর মুহূর্তেই পাল্টে গেল দৃশ্যপট। পরপর ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ ১০৯/০ থেকে পরিণত হলো ১১৭/৫-এ। এরপর তানজিমও ফিরলে স্কোর হয় ১১৮/৬। রশিদ একাই তুলে নেন ৪টি উইকেট। শারজাহর গ্যালারিতে তখন বাংলাদেশের সমর্থকরা যেন নিঃশ্বাস নিতে ভুলে গেছেন।

যেখানে মাত্র ৩৫ রান দরকার, হাতে আছে ৪ উইকেট সাধারণত এমন পরিস্থিতিতে ভয় পাওয়ার কিছু থাকে না। কিন্তু যেভাবে একের পর এক ব্যাটার বিদায় নিচ্ছিলেন, তাতে মনে হচ্ছিল, আফগানরাই হয়তো ঘুরে দাঁড়িয়ে নেবে জয়। ঠিক সেই অবস্থায় উইকেটে এসে দাঁড়ান সোহান ও রিশাদ।

তারা দুইজন ছিলেন না কোনও হিরো সাজানোর মতো ব্যাটার। কিন্তু ওই মুহূর্তে দল যা চেয়েছিল, সেটাই দিয়েছেন তারা-নির্ভরতা। জবাব দিয়েছেন চাপকে। একেকটি সিঙ্গেল, একেকটি বাউন্ডারি যেন নিঃশ্বাস ফিরিয়ে দিচ্ছিল বাংলাদেশের জন্য।

রিশাদ ও সোহান মিলে ১৮ বলে ৩৫ রানের জুটি গড়েন। জয় আসে ৮ বল হাতে রেখেই। কোনো মারকাটারি শট নয়, বরং গুছিয়ে খেলা-সেই ক্লাসিক কন্ট্রোলড ফিনিশ। সোহান শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ২৩ রানে (১৩ বল), রিশাদ করেন ১৪ (৯ বল)।

তার আগে অবশ্য ম্যাচের প্রথমার্ধে বাংলাদেশ বল হাতে রেখেছিল নিয়ন্ত্রণ। আফগানিস্তানকে ৯ উইকেটে ১৫১ রানে থামিয়ে দেওয়া ছিল বোলারদের একজোট চেষ্টার ফল। তানজিম ও রিশাদ নেন ২টি করে উইকেট, বাকিরাও ছিলেন ধারাবাহিক। আফগান ইনিংসে নবীর ঝড়ো ২৫ বলে ৩৮ রান ছাড়া বড় কোনো ইনিংস আসেনি। তারপর ব্যাট হাতে নেমে ঠিকই হাসি মুখে মাঠ ছাড়তে পারল বাংলাদেশ।

কাল দ্বিতীয় ম্যাচ। বাংলাদেশ চাইবে আজকের ভুলগুলো শুধরে নিয়ে সিরিজটা জিতে নিতে। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর-

আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১৫১/৯ (গুরবাজ ৪০, নবী ৩৮, ওমরজাই ১৮, শরাফউদ্দিন ১৭; তানজিম ২/৩৪, রিশাদ ২/৩৩, নাসুম ১/১৮)। 

বাংলাদেশ: ১৮.৪ ওভারে ১৫৩/৬ (পারভেজ ৫৪, তানজিদ ৫১, নুরুল ২৩*, রিশাদ ১৪*; রশিদ ৪/১৮, নূর ১/২১, ফরিদ ১/২৬)। 

ফল: বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী। 

ম্যাচ সেরা: পারভেজ হোসেন ইমন। 

সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ ১–০তে এগিয়ে।

আরও পড়ুন