যুক্তরাষ্ট্রের সান দিয়েগো শহরের ঐতিহাসিক হোটেল ডেল করোনাডো শুধু রাজকীয় সৌন্দর্যের জন্যই বিখ্যাত নয়, এটি দেশের অন্যতম ‘ভুতুড়ে’ হোটেল হিসেবেও পরিচিত। ট্রাভেল চ্যানেলের তথ্য অনুযায়ী, ১৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে হোটেলটি রহস্য ও অতিপ্রাকৃত ঘটনার কেন্দ্রস্থল হিসেবে পরিচিত।
হোটেলটি আকর্ষণ করেছে পর্যটক, হলিউড তারকা, বিশ্বনেতা এবং রাজপরিবারের সদস্যদের। তবে সবচেয়ে আলোচিত অতিথি হলেন কেট মরগান, যার আত্মা আজও হোটেলের করিডোরে ঘুরে বেড়ায় বলে দাবি করা হয়। সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি শিরোনাম দিয়েছে, ‘যে নারী চেক ইন করে হোটেল থেকে কখনই চেক আউট করেননি’।

হোটেলের ঐতিহ্য ব্যবস্থাপক জিনা পেট্রোনে জানান, কেট ১৮৯২ সালের থ্যাঙ্কসগিভিং ডেতে হোটেলে এসে উঠেছিলেন এবং চেক ইন করার সময় নিজেকে লটি বার্নার্ড নামে পরিচয় দেন। রেজিস্ট্রেশন বইয়ের সেই স্বাক্ষর আজও হোটেলের জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে।
কেট বলেছিলেন, তিনি তার ভাইয়ের জন্য অপেক্ষা করছেন। প্রতিদিন তিনি হোটেলের কর্মীদের জিজ্ঞেস করতেন, তার ভাই এসেছে কিনা। ছয় দিন পর হোটেলের সিঁড়িতে কেটের মৃতদেহ পাওয়া যায়। কিন্তু সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পরও কেউ তার মরদেহ নিতে আসেনি। এরপর থেকেই হোটেলের ভেতরে অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে শুরু করে।

হোটেলের কর্মী ও অতিথিরা জানান, হঠাৎ দরজা খোলা বা বন্ধ হওয়া, অকারণে ঠান্ডা বাতাস বয়ে যাওয়া, অদ্ভুত শব্দ শোনা বা আবছা ছায়ামূর্তি দেখা যায়। একবার সমুদ্রতীরে হোটেলের কর্মীরা এমন একটি ‘বিউটি শট’ তুলেছিলেন, যেখানে কোনো মানুষ থাকা সম্ভব নয়, কিন্তু ছবিতে দেখা যায় রহস্যময় একটি অবয়ব।
এইসব অভিজ্ঞতা হোটেল ডেল করোনাডোকে হ্যালোইন মৌসুমে পর্যটকদের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয় করে তুলেছে। হোটেলের হেরিটেজ ডিপার্টমেন্ট এমনকি এই বিষয় নিয়ে একটি বই প্রকাশ করেছে, যার শিরোনাম ‘দ্য বিউটিফুল স্ট্রেঞ্জার: দ্য ঘোস্ট অফ কেট মরগান অ্যান্ড দ্য হোটেল ডেল করোনাডো’।

পেট্রোনে জানান, কেউ চাইলে কেটের রহস্যময় রুমে থাকতে পারবেন। তিনি রসিকতার ছলে বলেন, ‘এটি তৃতীয় তলায়। আপনি চাইলে সেখানে থাকুন, এবং দেখুন কিছু অনুভব করতে পারেন কিনা।’
হোটেল ডেল করোনাডোতে কেট মরগানের রহস্য ও আত্মার গল্প এখনও পর্যটকদের জন্য এক রহস্যময় আকর্ষণ হিসেবে রয়ে গেছে।
যে দেশের ইতিহাসে প্রথমবার শনাক্ত হলো মশা
গাড়িশূন্য মাকিনাক দ্বীপে ঘোড়ার রাজত্ব !