লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবির আইন আল-হিলওয়েতে ইসরায়েলের ড্রোন হামলায় অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সাইদন শহরের উপকণ্ঠে শিবিরের একটি মসজিদের পার্কিং এলাকায় থাকা একটি গাড়িকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে লেবাননের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এনএনএ।
হামলায় অন্তত চারজন আহত হয় এবং আরও বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে আল-জাজিরাকে লেবাননের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
ইসরায়েল দাবি করেছে, শরণার্থী শিবিরের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অবস্থানরত হামাস সদস্যদের লক্ষ্য করেই হামলাটি চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আরবি মুখপাত্র আভিখাই আদ্রিয়ি বলেন, ‘উত্তর সীমান্তে কোনো হুমকি বরদাশত করা হবে না এবং লেবাননে হামাসের অবস্থান শক্ত করার যেকোনো চেষ্টা প্রতিহত করা হবে।’
তবে হামাস ইসরায়েলের দাবি প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছে, ‘শিবিরে তাদের কোনো প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নেই। সংগঠনটি এই হামলাকে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে বর্বর আগ্রাসন এবং লেবাননের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে।’
এর আগে মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের আরেক স্থানে ইসরায়েলি হামলায় আরও দুইজন নিহত হয়।
গাজায় ইসরায়েলি অভিযান শুরুর পর ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে লেবাননে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর কয়েকজন নেতা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন। গাজায় চলমান যুদ্ধের ফলে এখন পর্যন্ত ৬৯ হাজার ৪৮৩ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। অন্যদিকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয় ১,১৩৯ জন এবং ২০০ জনের বেশি মানুষ জিম্মি হয়।
যুদ্ধ শুরুর পরদিন থেকেই লেবাননের হিজবুল্লাহ ইসরায়েলে রকেট নিক্ষেপ শুরু করলে ইসরায়েলও লেবাননে গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলা চালায়। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে এই উত্তেজনা পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রূপ নেয়, যাতে লেবাননে চার হাজারের বেশি এবং ইসরায়েলে ১২৭ জন নিহত হয়; নিহতদের মধ্যে ৮০ জন ছিলেন সৈন্য।
যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে, এরপরও ইসরায়েল লেবাননে একাধিক হামলা চালিয়েছে। যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ২৭০ জনের বেশি নিহত এবং অন্তত ৮৫০ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
লেবাননের রাজনৈতিক বিশ্লেষক করিম এমিল বিতার বলেন, ‘ইসরায়েল প্রতিনিয়ত যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে। তার দাবি, লেবানন সরকার নিজেদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে সেনাবাহিনীকে হিজবুল্লাহ নিরস্ত্র করার নির্দেশ দিলেও ইসরায়েল চুক্তির শর্ত মানেনি। যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী ২০২৪ সালের ২৬ জানুয়ারির মধ্যে দক্ষিণ লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহারের কথা ছিল, যা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।’
সৌদিকে বিধ্বংসী যুদ্ধবিমান দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, জানালেন ট্রাম্প
যে অভিযোগে ৭৯ বাংলাদেশি জেলেকে আটক করলো ভারত