রাজধানীর বনশ্রী ও আফতাবনগর এলাকার বাসিন্দাদের বহুদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করল ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। নড়াই নদী (রামপুরা খাল) পেরিয়ে দুই এলাকার মধ্যে সরাসরি যাতায়াত সহজ করতে নদীর ওপর তিনটি সেতুর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টায় আফতাবনগরের লেকভিউ রোডে এ সেতু নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন আফতাবনগর, বনশ্রী ও রামপুরা এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। দুই পাশের আবাসিক এলাকাগুলো পরিকল্পিত হলেও মাঝখানে নড়াই নদী যেন হয়ে দাঁড়িয়েছিল এক অনতিক্রম্য বাধা।

এই নদীটির উপর এখন পর্যন্ত কোনো পাকা সেতু না থাকায়, দুই পাশের মানুষের ৬–৭ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হতো, যা সময় ও ভোগান্তি দুটোই বাড়িয়ে দিত।
বাসিন্দারা নিজেদের প্রয়োজনেই তৈরি করেছিলেন একাধিক বাঁশের সাঁকো। তবে সময়ের ব্যবধানে সেগুলো এখন নড়বড়ে ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থী, বয়স্ক ও অসুস্থদের চলাচলে প্রায়ই ঘটছিল দুর্ঘটনা। এই প্রেক্ষাপটেই ডিএনসিসি উদ্যোগ নেয় তিনটি স্থায়ী ও নিরাপদ সেতু নির্মাণের।
ডিএনসিসি সূত্র জানিয়েছে, নির্মাণাধীন সেতুগুলোর মধ্যে দুটি হবে যানবাহন চলাচলের উপযোগী এবং একটি শুধু পথচারীদের জন্য। সেতুগুলোর নামকরণ করা হবে নড়াই সেতু নামে, যা ঐতিহাসিকভাবে খাল নয় বরং নদী হিসেবে পরিচিত।

ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, এই নদী এক সময় প্রবাহমান ছিল। বিভিন্ন সময়ে দখল-দূষণের ফলে এটি মৃতপ্রায় খালে রূপ নিয়েছে। আমরা চাই এটিকে আবার জীবন দিতে। সেতু নির্মাণ শুধু যোগাযোগের উন্নয়ন নয়, এটি একটি নদীকে পুনরুদ্ধারের অংশ।
তিনি আরও জানান, সেতু নির্মাণ ছাড়াও ডিএনসিসি ভবিষ্যতে এই নদীপথ ব্যবহার করে নৌযান চালুর সম্ভাবনাও বিবেচনা করছে।
গত ৯ আগস্ট, জাগো নিউজে 'আফতাবনগর-বনশ্রীবাসীর কষ্ট কমাতে নড়াই নদীতে হবে ৩ সেতু' শিরোনামে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর ঠিক এক মাস পরই উদ্বোধনের মাধ্যমে এই উদ্যোগ বাস্তব রূপ নিতে শুরু করল।
