সিরাজগঞ্জে একটি ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের সময় বৃষ্টি অধিকারী নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের দাবি, কর্তব্যরত চিকিৎসক ও কর্তৃপক্ষের অবহেলায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয়েছে ওই নারীর। নিহত বৃষ্টি অধিকারী পৌরসভার রায়পুর ১ নম্বর মিলগেট এলাকার গনেশ কুমারের মেয়ে ।
সোমবার (২৫ মার্চ) জেলা শহরের সেবা জেনারেল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। মৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বৃষ্টির পরিবারকে দ্রুত সৎকার করার জন্য ৩০ হাজার টাকা দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও কর্তব্যরত চিকিৎসক গা ডাকা দিয়েছে। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি।
পরিবারের সূত্রে জানা যায়, নিহতের স্বামীর নাম গৌতম দাস। তিনি নাটোর জেলার নলডাঙ্গা থানার মাতনগর গ্রামের বাসিন্দা। বৃষ্টির সন্তান প্রসবের সময় হওয়ায় তাকে মায়ের বাড়িতে রেখে যান স্বামী গৌতম। গত ২৫ মার্চ রাতে সেবা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দশ হাজার টাকা চুক্তিতে হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আলী অস্ত্রোপচারের জন্য সম্মত হয়। অস্ত্রোপচারের পর রাতে বৃষ্টির শারিরীক অবস্থার অবনতি হয় এবং পেট ফুলে যায়। বিষয়টি রাতে হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আলীকে অবগত করলে তখন বিষয়টি এড়িয়ে যান। পরদিন সকালে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দশ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে দ্রুত হাসপাতাল ত্যাগ করতে বলে কর্তৃপক্ষ। পরে অ্যাম্বুলেন্স করে বগুড়ায় নেওয়ার পথে মারা যান বৃষ্টি ।
হাসপাতালে আসা অন্য রোগীর স্বজন মুরাদ জানান, বিষয়টি ধামাচাপা ও দ্রুত সৎকার করতে নিহতের পরিবারকে ৩০ হাজার টাকা দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সাথে চুক্তি করা ১০ হাজার টাকাও ফেরত দিয়েছে ।
নিহতের ভাই প্রান্ত বাগচী বলেন, সিজার করার জন্য গত ২৫ মার্চ হাসপাতালে ভর্তি করি। দশ হাজার টাকা চুক্তিতে তাকে অপারেশন থিয়েটারে সিজারের জন্য নিয়ে যায়। অপারেশন শেষে তিনি এক ছেলে বাচ্চার জন্ম দেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরনের ফলে মাঝরাতে বৃষ্টির পেট ফুলে যায়। আমরা বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সকালে থানা পুলিশের ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাদের হাসপাতাল থেকে বের হতে বাধ্য করে। পরে অ্যাম্বুলেন্সে বগুড়ায় নেওয়ার পথে শ্বাসনালীর দিকে খেয়াল করলে দেখি সে অনেক আগেই মারা গেছে।
হাসপাতালের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করবেন কি না জানতে চাইলে প্রান্ত বলেন ,আমরা গরীব মানুষ। ঝামেলায় যেতে চাই না। তবে হাসপাতালে ভালো মানুষকে নিয়ে এসে আর কারো যেন মরদেহ নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে না হয়। তবে অভিযোগ করার বিষয়ে পরিবারের সাথে আলোচনা করে পরে জানাবো ।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, বিষয়টি এই মাত্র জানতে পারলাম, আমরা খতিয়ে দেখছি।
