পিরোজপুরের কাউখালীতে বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকাল থেকে শ্রীগুরু সংঘ বাংলাদেশ- কেন্দ্রীয় আশ্রমে পাঁচ দিন ব্যাপী রাস উৎসব শুরু হয়েছে। শ্রীগুরু সংঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীশ্রীমদ দুর্গাপ্রসন্ন পরমহংসদেবের ১৩৪তম আবির্ভাব তিথী রাস পূর্ণিমায় প্রতিবছর এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
পাঁচ দিনের এ উৎসব ঘিরে দেশ ও বিদেশের কয়েক লাখ ভক্ত ও পূণ্যার্থীর সমাগম ঘটবে। এ উপলক্ষে কাউখালী জনপদ এখন মুখরিত। শ্রীগুরু সংঘের কেন্দ্রীয় সভাপতি স্বামী জগন্নাথনন্দ স্বরস্বতী আশ্রম অঙ্গনে সংঘের পতাকা উত্তোলন করে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন।
পরে ‘সত্য, সেবা, নীতি, ধর্ম-জীবনের চারি কর্ম’ এ বাণীকে সামনে রেখে দেশ-বিদেশের ১২৫টি শাখা সংঘের হাজার-হাজার ভক্তরা বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করেন।
এ শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা বিএনপির সভাপতি এস এম আহসান কবির, সাধারণ সম্পাদক এইচ এম দ্বীন মোহাম্মদ, কাউখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো: সোলায়মানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নেতারা।
পাঁচ দিনের এ উৎসবে প্রতিবছরের মতো আশ্রম প্রাঙ্গণের বিশাল এলাকাজুড়ে বসেছে রাস মেলা। নাগরদোলা, রকমারি জিনিসের পসরা সাজিয়েছেন দোকানিরা। পাহাড়ি কাঠের নকশায় গড়া আকর্ষণীয় ফার্নিচারসহ দূর দূরান্ত থেকে দোকানিরা এসেছেন মেলায়।
কেন্দ্রীয় আশ্রমের নির্বাহী সভাপতি অধ্যক্ষ পরিমল চন্দ্র কর্মকার বলেন, দেশ ও জাতির কল্যাণার্থে ও বিশ্ব শান্তি কামনায় পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসবে ২৪ প্রহরব্যাপী তারকব্রহ্ম মহানাম সংকীর্তন অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া মঙ্গল আরতি, শ্রীমদভাগবদ গীতা ও গুরুগীতা পাঠ, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, বস্ত্র বিতরণ, জাতি ধর্ম নির্বিশেষে গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান, হাসপাতালে দুঃস্থ রোগীদের মধ্যে ফল বিতরণ, সান্ধ্যকালীন প্রার্থনা ও ধর্ম সভাসহ নানা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
আগামী ১০ নভেম্বর সোমবার সমাপনী দিনের উৎসবে কুঞ্জভঙ্গ, নগরকীর্তন ও পরিক্রমা এবং গুরুপূজা শেষে মহাপ্রসাদ বিতরণের মধ্য দিয়ে উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে। উৎসবে দেশের ভক্তসহ জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে লাখের মানুষের সমাগম হবে। ইতিমধ্যে ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা, আমেরিকা রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ বিদেশ থেকেও ভক্তরা অনুষ্ঠানে সমবেত হয়েছেন।
কাউখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আহসান কবির জানান, অন্য ধর্মের অনুষ্ঠান হলেও এটা এই অঞ্চলের ঐতিহ্য বহন করে, শত বছর ধরে এই ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব অনুষ্ঠানটি নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি আমাদের দল থেকেও গতবছরের ন্যায় এ বছরও আড়াই শ’ স্বেচ্ছাসেবক নিরলসভাবে দিন রাত পরিশ্রম করে যাবে।
এই আবির্ভাব উৎসবের কর্মী প্রধান রতন কর বলেন, পাঁচদিনের এই উৎসবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শ্রীগুরুর ভক্তরা ছাড়াও মুসলিম ভাইয়েরা এই অনুষ্ঠানটি সফল করার জন্য আমাদের কর্মীর পাশাপাশি তারাও আমাদের পাশে থেকে সহযোগিতা করে থাকেন।
কাউখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো: সোলায়মান জানান, পুরো অনুষ্ঠানের এলাকা সিসি ক্যামেরার আয়ত্তে রয়েছে এবং উৎসবকে ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কয়েক স্তরের ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বসানো হয়েছে অস্থায়ী মেডিক্যাল ক্যাম্প।
আজ যেসব এলাকায় গ্যাস থাকবে না 