শ্রীপুরে সেপটিক ট্যাংকের পানিতে সড়কে জলাবদ্ধতা

আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:৪২ পিএম
শুষ্ক মৌসুম, নেই বৃষ্টি। সড়কে টয়লেটের পানি জমে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার বহেরারচালা মোড় থেকে নতুন বাজার সড়কের ভূঁইয়া মার্কেটের সামনে শরিফ ভূঁইয়ার বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের পানি সড়কে এসে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
 
জানা গেছে, স্থানীয় শরিফ ভূঁইয়া সড়কের পাশেই নির্মাণ করা তার বাড়ির সেপটিক ট্যাংক। সেখান থেকে ময়লা পানি এসে পড়ছে সড়কে। ফলে এ সড়কে চলাচল রীতিমতো দুর্ভোগ হয়ে উঠেছে।

এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী শিক্ষার্থী, বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিক, পথচারী, স্থানীয় বাসিন্দা ও এলাকাবাসী দুর্ভোগ ও দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ। মানুষের মলযুক্ত পানির দুর্গন্ধে প্রায় মাস খানেক ধরে সড়কের আশপাশের দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। নিরুপায় হয়ে তারা গণস্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন পৌর প্রশাসক বরাবর।
 

স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা বলেন, দেড় মাস ধরে ম্যানহোলের মুখ দিয়ে পানি বের হচ্ছে। দুর্গন্ধযুক্ত পানি সারাদিন সড়কে জমে থাকে।

সড়কের পাশের বাসার এক গৃহিনী বলেন, ময়লা পানির গন্ধে বাসার ভেতরে থাকা যায় না। সারাদিন কিছু করতে পারি না। বাচ্চারাও বাসার বাইরে যেতে পারছে না।

স্থানীয় বেড়াইদেরচালা স্কুলের শিক্ষার্থী সানি, আল-আমীন, ফরিদ হোসেন, সায়মা ও রোজিনা আক্তার বলেন, জলাবদ্ধ অংশটুকু জামা হাঁটু পর্যন্ত উঠিয়ে পার হতে হয়। অনেক সময় জামা ধরে পার হওয়ার সময় হাত থেকে বই পড়ে ভিজে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বলেন, ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত পানির কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিন এ পানি মাড়িয়েই তাদের স্কুলে যেতে হচ্ছে।
 

ব্যবসায়ী খায়রুল ইসলাম বলেন, দোকানের সামনে এসব পানি জমে থাকার কারণে কোনো ক্রেতা দোকানে আসতে চায় না। ব্যবসা-বাণিজ্য নেই বললেই চলে।

এলাকাবাসী বলছেন, পয়ঃনিষ্কাশনের নালা সরাসরি সড়কে ছেড়ে দেওয়ায় পথচারীদের চলাচলে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। অনেকের দোকানপাটের সামনে ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত পানি জমে শ্যাওলা পড়ে গেছে। শৌচাগারের পানি সড়কে ছেড়ে দেওয়ায় এ সড়ক দিয়ে নাক বন্ধ করে চলাচল করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দা, এলাকাবাসী, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিক এবং পথচারীদের।
 
 
সরেজমিনে দেখা যায়, শরিফ ভূঁইয়ার বাড়ির সেপটিক ট্যাংকটি সড়কের ফুটপাতে নির্মাণ করা হয়েছে। সেপটিক ট্যাংক থেকে ময়লা পানি সরাসরি সড়কে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এতে সড়কের প্রায় ৩০০ গজ পর্যন্ত পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ময়লা পানি জমে থাকার কারণে বোঝাই যায় না এটা পৌরসভার পাকা কার্পেটিং সড়ক।
 
এ সড়কে নতুন পথচারী বা গাড়ির চালক ভূঁইয়া মার্কেটের সমানে আসলেই ধরে নেবে সড়কের মাঝখানে গর্ত হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বাস্তবে শৌচাগারের পানি সড়কে জমে থাকার কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। রিকশা ছাড়া হেঁটে চলার কোনো উপায় নেই। অনেকেই আবার চলাফেরা করছেন গামবুট (বড় জুতা) পায়ে। দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা পানি দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে শরীরে বিভিন্ন চর্মরোগের সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয় পৌর কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা এ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

শ্রীপুর পৌরসভার প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
NJ