ঢাকা
সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

দৌলতপুরে বন্ধ হচ্ছে না কৃষিজমি থেকে মাটি খনন 

আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:২৩ পিএম

মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর এলাকায় কৃষিজমি থেকে মাটি খনন করছে মের্সাস প্রিন্স কনস্ট্রাকশন। এদিকে আবাদি জমি থেকে মাটি খননের ঘটনায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নিয়ে কমিটি গঠন করে তদন্ত করার নির্দেশনা দিয়েছে হাইকোর্ট। হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে বহাল রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে মের্সাস প্রিন্স কনস্ট্রাকশনের মালিক বালু মহালের ইজারাদার মোস্তাফিজুর রহমান প্রিন্সের পক্ষে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে ১৬ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি মো. রেজাউল হকের চেম্বার জজ আদালত নো অর্ডার দেন।

মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মাহবুবুল ইসলাম এবং রিট পিটিশনকারী কৃষকদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব।

আদেশের বিষয়ে রিটকারী আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুবু বলেন, আদালত উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে চেম্বার জজ আদালত নো অর্ডার আদেশ দেন। যার মধ্যে দিয়ে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থার আদেশ বহাল রইলো। ফলে দৌলতপুর উপজেলার রাহাতপুর মৌজার কৃষিজমিকে বালু মহালে পরিণত করা আপাতত বন্ধ রইলো এবং ভূমি মন্ত্রালয়ের সচিবকে স্পেশাল ইনকোয়ারি কমিটি গঠন করে ওই বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম চলমান রইলো।

তিনি আরও বলেন, বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ৭ এর ক ও ৯ ধারাসহ কৃষিজমি সংরক্ষণসহ সংবিধানকে অপেক্ষা করে মানিকগঞ্জ জেলার প্রশাসন শুধু ভেস্টেড কোয়ার্টারদের স্বার্থ রক্ষার জন্য কৃষিজমিকে বালু মহালে পরিণত করার চেষ্টা করছে।

গত ৪ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর উপজেলার রাহাতপুরে কৃষিজমি থেকে নির্বিচারে মাটি কেটে নেওয়ার বিষয়ে অবিলম্বে ভূমি মন্ত্রালয়ের সচিবকে তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

এর আগে এ সংক্রান্ত বিষয়ে রিট আবেদন দায়ের করা হয়। রিটে ভূমি মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বিবাদী করা হয়েছে।

রিট আবেদনে বলা হয়, রাহাতপুর মৌজায় ৪ হাজার একরের বেশি কৃষিজমি থেকে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। সেখানে ৩ ফসলি জমির মালিকদের থেকে খাজনা-কর নেওয়া বন্ধ করে সেই জমি বালু মহাল ঘোষণা করে ইজারা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। ইজারাদার প্রতিনিয়ত বালু-মাটি খনন করে কৃষিজমি নষ্ট করছেন।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীদের পক্ষে জেলা প্রশাসকের কাছে বারবার অভিযোগ করা হলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। ইজারাদারের লোকজন দেশি-বিদেশি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সাধারণ কৃষকদের হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছেন। এর প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী মো. শফিকুল ইসলামসহ ১৭ কৃষকের পক্ষে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে রিট আবেদন করা হয়।

রিট শুনানির পর আদালত আগামী ৩ মাসের জন্য কৃষিজমির নির্বিচার ড্রেজিং বন্ধ করার নির্দেশনা দেন। এছাড়া ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করে ৪ সপ্তাহের মধ্যে আদালতে এ সংক্রান্ত রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

ফরিদপুর নৌঅঞ্চলের নৌপুলিশ সুপার এসপি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করি। ১৮ নভেম্বর দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। তখন আমরা একটি কাঁটার, একটি ড্রেজার জব্দ করি। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। 

মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিয়ান নুরেন বলেন, ইজারা মহাল এলাকার বাইরে একটি মহাল কাঁটার ও ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে। এ সময় কাঁটার ও ড্রেজার মেশিন জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তাদের এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, যে কেউ আবাদি জমি থেকে মাটি বা বালু উত্তোলন করলে তাকে আইনের আওতায় নেওয়া হবে।

NJ
আরও পড়ুন