ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

নড়াইলে দুর্গাপূজা উপলক্ষে নৌকাবাইচ ও গ্রামীণ মেলা

আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:০৫ পিএম
নড়াইলের লোহাগড়ায় শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মধুমতি নদীতে প্রাণবন্ত পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের অন্যতম প্রতীক নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা।
 
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের শিয়রবর মধুমতি নদীতে আয়োজন করা হয় এ বর্ণাঢ্য প্রতিযোগিতা।
 
বৃষ্টি উপেক্ষা করে উৎসবমুখর পরিবেশে এ নৌকাবাইচ উপভোগ করেন স্থানীয়রা। নদীর তীরজুড়ে জমায়েত হয় হাজার হাজার মানুষ। হাজারো দর্শক নদীর দুইপাড়ে অবস্থান নিয়ে উৎসবের অংশগ্রহণ করেন এবং নৌকা বাইচের অনবদ্য আনন্দ উপভোগ করেন। শিশু, বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ সবাই যেন ফিরে যান শেকড়ের সেই আনন্দঘন গ্রামীণ উৎসবে। অনেকেই আজ পরিবার-পরিজন নিয়ে দিনব্যাপী নদীর পাড়ে আনন্দময় সময় কাটান। 
 
এর আগে প্রতিযোগিতা দেখতে দুপুর থেকেই দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করে। শুরুর আগেই নদীর দুইপাড় কানায় কানায় ভরে যায় দর্শনার্থীতে। পুরো বাইচ উপভোগ করার জন্য অনেক দর্শনার্থী ইঞ্জিনচালিত নৌকায় চড়ে প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন। এ সময় গ্রাম বাংলার জনপ্রিয় নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা শিশু, নারী-পুরুষসহ সব শ্রেণির দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। 
এবারের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় নড়াইল জেলাসহ আশেপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ৪টি নৌকা। প্রতিটি দলে ছিলেন ৩০-৪০ জন মাঝি, যারা সমম্বিলতভাবে নৌকা চালিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন।
 
নৌকাবাইচের সঙ্গে গ্রামীণ মেলার আয়োজনও ছিল। মেলায় ছিল হাওয়াই মিঠাই, মাটির তৈরি পুতুল, খেলনার দোকান, পিঠা-পুলি, বাঁশি ও ঢোলের মধুর সুর।
 
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন নড়াইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল ইসলাম।
 
উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, নৌকাবাইচ আমাদের ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি শুধুমাত্র একটি প্রতিযোগিতা নয়, এটি আমাদের শেকড়, সংস্কৃতি ও মানুষের সামাজিক সম্প্রীতির প্রতীক। এই আয়োজন নতুন প্রজন্মকে বাংলার শেকড়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবে এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের আয়োজন অব্যাহত থাকবে বলে আমার প্রত্যাশা।
 
গৃহবধূ শারমিন আক্তার বলেন, বিশেষ বিশেষ সময়ে এ ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা উচিত, প্রতিবছরের মতো এবারো প্রতিযোগিতা দেখতে এসেছিলেন তিনি। পরিবারের সবাইকে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখিয়েছেন এবং পরিবারের সবাই অনেক আনন্দ করেছেন বলেও জানান।
শিশু দর্শনার্থী জোনায়েত ও সাইমন জানায়, এবারই প্রথম কোনো নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখলাম। অনেক মজা পেয়েছি নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখে। নৌকায় চড়ে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখার আনন্দই আলাদা। এর আগে কোনো প্রতিযোগিতা দেখে এত আনন্দ কখনো হয়নি।
 
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- লোহাগড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. আহাদুজ্জামান বাটু, সাধারণ সম্পাদক কাজী সুলতানুজ্জামান সেলিম, শালনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাবেক ইউপি সদস্য মো. মফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কাজী উজ্জ্বল, আয়োজক কমিটির সভাপতি উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. কামাল শেখ, সাধারণ সম্পাদক তুহিন শিকদারসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। 
 
প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার হাতে তুলে দেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. আহাদুজ্জামান বাটু ও সাধারণ সম্পাদক কাজী সুলতানুজ্জামান সেলিম।
NJ
আরও পড়ুন