প্রজ্ঞাপন জারি করে পরিবেশের ক্ষতিকারক আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস গাছ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। সাম্প্রতিক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বন-১ শাখার এক গেজেটে এসব গাছের ক্রয়-বিক্রয় ও রোপণ নিষিদ্ধ করা হয়।
সরকারি এই নির্দেশনা অমান্য করে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে দেদারসে চলছে আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস গাছের ক্রয়-বিক্রয়। নতুন করে বিভিন্ন এলাকায় এসব নিষিদ্ধ গাছের বাগান করা হচ্ছে।
ইতোপূর্বে বিভিন্ন নার্সারিকে সরকারিভাবে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে প্রণোদনা দিয়ে এসব গাছ উৎপাদন বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে সরকারি নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নার্সারিগুলো এখনো তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
তবে কৃষি বিভাগের নিশ্চুপ ভূমিকার কারণে নিষিদ্ধ আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস বিক্রি কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে নার্সারিগুলো।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ বলছে, আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস গাছের ক্ষতি সম্পর্কে নার্সারি মালিক ও জনসাধারণকে সচেতন করছে তারা।
উপজেলা কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, ইতোমধ্যে প্রায় ৭৬ হাজার আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস গাছের চারা ধ্বংস করা হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ৪৬টি নার্সারিকে ৩ লাখ ৪ হাজার টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে।
পরিবেশবাদী সংগঠন সেভ দ্যা নেচার এর নালিতাবাড়ী শাখার আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম মন্ডল বলেন, আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস গাছ পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর। আমরা এ বিষয়ে সাধারণ মানুষকে অনেক আগে থেকেই সচেতন করে আসছি। কিন্তু প্রশাসনের পদক্ষেপ না নেওয়ায় এসব গাছ যত্রতত্র ক্রয়-বিক্রয় ও রোপণ এখনো বন্ধ হচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, প্রণোদনা পেয়েও নার্সারিগুলো এখনো নিষিদ্ধ গাছ কেন উৎপাদন করছে? আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
বিক্রেতাদের ভাষ্যমতে, এসব গাছ নিষিদ্ধ হয়েছে তারা তা জানেন না, তাই বিক্রি করেন। এ বিষয়ে নার্সারি মালিকদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা কোনো মতামত দেননি।
স্থানীয় সচেতন সমাজ বলছে, প্রশাসনের নজরদারি আর সামাজিক সচেতনতাই বন্ধ করতে পারে পরিবেশের ক্ষতিকারক গাছ সৃজন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মশিউর রহমান সাংবাদিকদের জানান, ইতোমধ্যে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন নার্সারিকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস গাছ উৎপাদন বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব গাছ পরিবেশের জন্য কতটুকু ক্ষতিকর, তা বোঝাতে মতবিনিময় করা হয়েছে।
স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে কৃষি অফিস। এরপরও কোথাও আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস গাছের চারা রোপণ বা ক্রয়-বিক্রয় করা হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি বলেন, সরকারিভাবে আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস গাছ নিষিদ্ধ ঘোষণার পর আমরা উপজেলা এবং ইউনিয়নসমূহে মাইকিং করিয়েছি।
বিভিন্ন বাজারে, বিশেষ করে পৌর বাজারসমূহে যারা নিষিদ্ধ ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছ বিক্রি করতো তাদের সতর্ক করা হয়েছে। এরপরও কেউ এসব গাছ বিক্রি করলে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
রাস্তার পাশে ‘ইউক্যালিপটাস-আকাশমণি’ চারা রোপণ বন্ধের নির্দেশনা
লাখ টাকা মূল্যের বিদেশি আম গাছ চুরির অভিযোগ
চোখের জন্য ক্ষতিকর ইনস্ট্যান্ট কফি: গবেষণা