ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

টি-ব্যাগ থেকে মানব দেহে যাচ্ছে প্লাস্টিক কণা

আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:১৬ এএম

চা আমাদের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। ব্যস্ত জীবনে সহজ সমাধান হিসেবে টি-ব্যাগ ব্যবহার এখন ব্যাপক জনপ্রিয়। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণা জানাচ্ছে, এই সুবিধার আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি।

২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘কেমোস্ফিয়ার’-এ প্রকাশিত বার্সেলোনার অটোনোমাস বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত টি-ব্যাগ থেকে নির্গত মাইক্রো ও ন্যানোপ্লাস্টিক মানব শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।

গবেষকরা বাজারের কয়েকটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের টি-ব্যাগ পরীক্ষা করে দেখেন, এগুলো মূলত নাইলন-৬, পলিপ্রোপিলিন ও সেলুলোজ দিয়ে তৈরি। গরম পানিতে চা বানানোর সময় এগুলো থেকে কোটি কোটি প্লাস্টিক কণা নির্গত হয়।

সংখ্যাগতভাবে দেখা গেছে-

  • পলিপ্রোপিলিন: প্রতি মিলিলিটার চায়ে প্রায় ১.২ বিলিয়ন কণা
  • সেলুলোজ: প্রায় ১৩৫ মিলিয়ন কণা
  • নাইলন-৬: প্রায় ৮.১৮ মিলিয়ন কণা

গবেষণায় আরও বলা হয়, এই ক্ষুদ্র কণাগুলো অন্ত্রের কোষ শোষণ করে রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ছড়িয়ে যেতে পারে। এমনকি এগুলো সরাসরি কোষের নিউক্লিয়াস পর্যন্ত পৌঁছে গিয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করে, যা দীর্ঘমেয়াদে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

সম্ভাব্য স্বাস্থ্যঝুঁকি

  • কোষের স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত
  • পরিপাকতন্ত্রের ক্ষতি
  • জেনেটিক উপাদান ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মিউটেশনের ঝুঁকি
  • প্রদাহজনিত সমস্যা
  • দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসারের ঝুঁকি

দেশে দ্রুত বাড়ছে টি-ব্যাগের ব্যবহার। বিশেষ করে কর্মব্যস্ত মানুষ সহজে চা বানানোর জন্য টি-ব্যাগের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠছেন। গবেষণা বলছে, বাংলাদেশে বিক্রি হওয়া টি-ব্যাগগুলোতেও একই ধরনের ঝুঁকি থাকতে পারে।

ঝুঁকি এড়ানোর উপায়

  • টি-ব্যাগের পরিবর্তে খোলা পাতা চা ব্যবহার
  • ধাতব বা কাপড়ের প্রাকৃতিক ছাঁকনি দিয়ে চা তৈরি
  • পরিবেশবান্ধব উপাদান দিয়ে তৈরি ব্র্যান্ড বেছে নেওয়া

টি-ব্যাগ ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধি

গবেষকরা বলছেন, মাইক্রো ও ন্যানোপ্লাস্টিকের প্রভাব নিয়ে আরও বিস্তৃত গবেষণা জরুরি। এ ধরনের তথ্যের ভিত্তিতে নীতিনির্ধারকরা ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলে স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব হবে।

NB/AHA
আরও পড়ুন