শহরে বসবাসের সুবিধা যেমন রয়েছে অনেক, তেমনি শহরে থাকা বাসিন্দাদের জন্য সুযোগও রয়েছে। কিন্তু কোলাহলপূর্ণ শহরের পরিবেশ দূষণের অনেক সময় বিপত্তির কারণ হয়ে পড়ে। সেটা কেবল মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে না, আমাদের পোষা প্রাণীগুলোর জন্যও মারাত্মকঝুঁকির কারণ হতে পারে। শহরের পরিবেশ দূষণ থেকে আমাদের পোষা প্রাণীদের রক্ষা করা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি তাদের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
বায়ুদূষণের ফলে শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জিসহ ফুসফুসের ক্যান্সার, এমনকি আরো গুরুতর রোগের সৃষ্টি হয়। এ সব রোগ যেমন মানুষের ক্ষেত্রে হয়, ঠিক তেমনি প্রাণীদের ক্ষেত্রেও হয়। ধুলাবালিসহ, যানবাহনের কালো ধোঁয়া, শিল্প কারখানার বিষাক্ত ধোঁয়া পোষা প্রাণীর সংস্পর্শে এলে তা তাদের প্রাণনাশের হুমকির কারণ হয়। আবার, দূষিত পানি পান করার ফলে পোষা প্রাণীদের দেহে নানা রোগজীবাণু প্রবেশ করে। এমনকি দূষিত মাটিতে হাঁটলে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা এবং ত্বকে জ্বালার সৃষ্টি হয় । শব্দদূষণের ক্ষেত্রেও প্রাণীদের ক্ষেত্রে নানা উদ্বেগ দেখা দেয়। ট্রাফিক, নির্মানাধীন ভবনের কাজ , এমনকি শিল্প কারখানার কার্যক্রমে প্রাণীদের মাঝে চাপ এবং উদ্বেগ দেখা দেয়। বিশেষ করে কুকুরদের মাঝে এ সমস্যা হয়। এমনকি শ্রবণশক্তিও হ্রাস পায়। অন্যদিকে অতিরিক্ত আলোতেও তাদের স্বাভাবিক ঘুম ব্যাহত হয় যা তাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে।

দূষণ থেকে বাঁচান প্রিয় পোষ্যকে
পোষা প্রাণীদের ক্ষেত্রে পরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন তৈরি করা আবশ্যক। শখ হলো বলে বাড়িতে একটা পোষ্য নিয়ে এলে হবে না। তার দায়িত্ব নিতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে তার সামগ্রিক স্বাস্থ্য। পোষা প্রাণীর মালিকেরা তাদের প্রিয় প্রাণীদের দূষণ থেকে রক্ষা করার জন্য কিছু পদক্ষেপ নিতে পারেন। প্রথমে আপনার শহরের বায়ুর মানের এবং দূষণের মাত্রা সম্পর্কে সচেতন হোন। সব দিনগুলোতে যে একইরকম দূষণ থাকবে না- এটাই স্বাভাবিক। তবে যে দিনগুলোতে দূষণের মাত্রা বেশি থাকে, সে দিনে আপনার পোষা প্রাণীকে বাইরে বের না করাই ভালো।

এক্ষেত্রে, যখন বাতাসের গুণমান ভালো থাকে, যেমন ভোরে তাদের নিয়ে হাঁটতে পারেন। আপনার বাড়ির ভেতরের বায়ুদূষণ অপসারণ করার জন্য এইচইপিএ ফিল্টারসহ এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন। বাড়িতে প্রাকৃতিক বায়ু চলাচল নিশ্চিত করুন। বাইরের দূষিত বায়ু থেকে পোষা প্রাণীদের রক্ষা করার ক্ষেত্রে জানালা বন্ধ করে রাখতে পারেন। পাশাপাশি বাড়ি পরিচ্ছন্ন রাখাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। পোষা প্রাণীদের বিছানা, খেলনা, খাবার-পানি, থালা-বাসন পরিষ্কার এবং দূষণমুক্ত রাখতে নিয়মিত ধুয়ে নিন। নিয়মিত ভ্যাকসিন দিবেন। যে কোনো সমস্যায় পশু চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। কারণ মানুষের মতো রোগগুলোর প্রত্যেকটি তাদের হয়ে থাকে।
আমাদের পোষা প্রাণী আমাদের পরিবারেরই একটি অংশ। বায়ুদূষণ, শব্দদূষণের ফলে তাদের স্বাস্থ্য হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়ে। সুতরাং, একটু সচেতন হলে তাদের প্রাণনাশের হুমকি থেকে আমরা সহজেই তাদেরকে রক্ষা করতে পারি।
