গ্রীষ্মের গরমের সকাল মানেই রোদের ঝলক। এই সময় চাই যথাযথ পেডিকিউর ও নেইল পলিশ। একঘেয়ে গোলাপি বা হালকা ন্যুড নয়, এই গ্রীষ্মে রঙে রঙিন করা যেতে পারে পায়ের নখ।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘নেইল আর্টিস্ট’ গালদিনা হিমেনেজ এবং তারকা ‘নেইল আর্টিস্ট’ এলে গারস্টেইন রিয়েলসিম্পল ডটকম-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেছেন, এই গ্রীষ্ম ফ্যাশনে পেডিকিউরের রাজত্ব করবে পায়ের নখের ১০টি বিশেষ রঙ।
উজ্জ্বল কোরাল (কমলা-লাল): গ্রীষ্মের ছোঁয়া
গরমের ছুটিতে রোদেলা পরিবেশে সবচেয়ে বেশি নজরে পড়ে যে রঙটিতে তা হল- উজ্জ্বল কোরাল বা কমলা-লাল শেইড বা রঙয়ের মিশ্রণ। গালদিনা হিমেনেজ বলেন, গরমের ছুটি অবকাশ যাপনে বা কর্মক্ষেত্র সব জায়গাতেই নখের জন্য গাঢ় এই রঙ মানানসই। তাই রঙটির জনপ্রিয়তা গ্রীষ্মজুড়েই টিকে থাকবে। এই রঙটি উপমহাদেশীয় ত্বকের সঙ্গেও চমৎকার ভাবে মানিয়ে যাবে বিশেষ করে যে কোনো উৎসবপূর্ণ আমেজে।
পিস্টাশিও (বাদামি সবুজ): ট্রেন্ডি আর নরম সবুজের ভারসাম্য
পিস্টাশিও বা বাদামি সবুজ রঙ এখন ফ্যাশন জগতে রয়েছে চাহিদার শীর্ষে। হালকা হলুদের আভা মিশ্রিত এই সবুজ রঙটি পায়ের নখে পরা যেমন সাহসী সিদ্ধান্ত, তেমনই চোখ ধাঁধানোও। হিমেনেজ বলেন, এটি পরার মাধ্যমে নখের সাজ থাকবে ট্রেন্ডে আবার খুব একটা ঝুঁকিও নিতে হবে না। কারণ এই রঙটি পশ্চিমা দেশের পাশাপাশি এশিয়ার দেশগুলোতেও ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
মাখন হলুদ: উষ্ণতায় মোড়া স্নিগ্ধতা
যারা রঙয়ের বেলায় খুব বেশি সাহসী নন, তাদের জন্য মাখনের মতো নরম হলুদ রঙটি দারুণ উপযুক্ত। হিমেনেজ মন্তব্য করেন, হলুদ এবং হলুদের আশপাশের রঙগুলো উষ্ণতার অনুভূতি দেয়। আর মাখন হলুদ তার ভেতরেও কিছুটা নম্রতা রাখে। এ কারণে যারা নখের সাজে বেশি গাঢ় নেইল পলিশ ব্যবহার করেন না তাদের কাছে এই রঙ বেশি পছন্দের। বাংলাদেশের গ্রীষ্মে কটন (সুতি), লিনেন ও মসলিনের পোশাকের সঙ্গে এই রঙ দারুণ মানিয়ে যায়।
সিট্রাস হলুদ: গ্রীষ্মের চঞ্চলতা
মাখন হলুদের চেয়ে একটু বেশি নজরকাড়া ও প্রাণবন্ত রঙ চাইলে সিট্রাস হলুদ বেছে নেওয়া যায়। নিউ ইয়র্কভিত্তিক তারকা ‘নেইল আর্টিস্ট’ এলে গারস্টেইন বলেন, এই রঙ প্রাণবন্ত, উৎসবের আমেজ দেয় এবং সে সঙ্গে গ্রীষ্মকালীন পোশাক ও কাপড়ের সঙ্গে দারুণ যায়। পেডিকিউরের সময়ে চাইলে এই রঙয়ের সঙ্গে লেমন থিমে ‘নেইল আর্ট’ বা ‘লিমোনচেলো’ ফ্রেঞ্চ ডিজাইনও করা যায়।
ল্যাভেন্ডার মিল্ক: প্যাস্টেল প্রেমীদের জন্য নিখুঁত
মিল্কি লাইলেক বা হালকা বেগুনি রঙটি, যারা খুব বেশি চটকদার না হয়ে নরম অথচ স্টাইলিশ কিছু খোঁজেন, তাদের জন্য উপযুক্ত। গারস্টেইন বলেন, এই রঙ সতেজ ও হালকা অনুভূতি দেয়, এতে অতিরিক্ত শাইন (চকচকে ভাব) থাকে যা অলিভ (জলপাই) স্কিন টোনে বা ত্বকের আভার সঙ্গে বিশেষভাবে মানায়। তবে অন্য স্কিন টোনেও কিন্তু মানিয়ে যায়।
খাঁটি সাদা: সাদার মাঝে সাহস
এই রঙয়ের বিশেষত্ব হল এর ‘রঙহীনতা’ই একে করে তোলে সবচেয়ে সাহসী। জনপ্রিয় গায়িকা, অভিনেত্রী রিহানা-কে প্রায়ই দেখা যায় পায়ের নখে খাঁটি সাদা পেডিকিউর করতে। গ্রীষ্মকালে রোদে চকচকে এই সাদা রঙ পা ও নখ দুটোকেই করে তোলে আরও উজ্জ্বল।
গভীর সমুদ্র নীল: মৎসকন্যার ডাক
সমুদ্রের নীল রঙ, বিশেষ করে ডিপ ওশান ব্লু (গভীর মহাসাগরীয় নীল) কখনও ট্রেন্ড থেকে হারিয়ে যায় না। গারস্টেইন বলেন, “এই রঙ শান্তি এনে দেয়, এটি যদি খুব ট্রেন্ড নাও হয়, তবুও কিন্তু গ্রীষ্মের মূল অনুভূতির সঙ্গে এর মিল আছে।”
এই রঙয়ের সঙ্গে চাইলে মেটালিক শেইড, স্পার্কল বা থ্রিডি টেক্সচার দিয়ে 'মারমেইড ফিল' আনা যায়।
ব্লু ক্রিম: কোমল নীলের স্বাদ
যারা গাঢ় নীল রঙটি সাহসী মনে করেন, তাদের জন্য ব্লু ক্রিম বা স্কাই ব্লু একটি আদর্শ বিকল্প। হিমেনেজ পরামর্শ দেন, এই হালকা নীল রঙটি ঠাণ্ডা টোন এনেও খুব বেশি ড্রামাটিক বা নাটকীয় হয় না। গ্রীষ্মে একে সহজেই ফ্যাশনে নিয়ে আসা যায়।
উজ্জ্বল লাল: চিরন্তন ক্ল্যাসিক
লাল রঙ চিরকালীন, চিরাচরিত এবং সর্বজনগ্রাহ্য। এটা এমন একটি রঙ, যা সব স্কিন টোনে বা ত্বকের আভার সঙ্গে মানিয়ে যায় এবং যে কোনো মৌসুমে ব্যবহারযোগ্য। তবে গ্রীষ্মকালে একটু উজ্জ্বল শেইডের লাল বেছে নিলে তা আরও নজরকাড়া হয়ে ওঠে। হিমেনেজ বলেন, এই রঙ ক্ল্যাসিক হলেও একঘেয়ে নয়, সাহসী এবং স্টাইলিশ।
ফিউশা: সাহসী গোলাপির গল্প
গরমে যদি একটু বেশি রঙচঙে কিছু নখের সাজে আনতে চান, তাহলে ফিউশা হতে পারে আদর্শ সঙ্গী। গারস্টেইন বলেন, এই রঙ খুবই প্রাণবন্ত, শক্তিশালী এবং চোখে পড়ে। ফুলেল পোশাকের সঙ্গে এটি দারুণ যায় এবং লাল রঙয়ের বদলে এটি গ্রীষ্মে পায়ের নখের রঙিন সাজে নতুন স্টেটমেন্ট তৈরি করতে পারে গাঢ় গোলাপি।