আমাদের শারীরিক সুস্থতা জীবনধারার ওপরই অনেকাংশে নির্ভর করে। নানা রকমের দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি এড়াতে স্বাস্থ্যকর জীবনচর্চার বিকল্প নেই। আজকাল দেখা যায় যে, অনেক অল্প বয়সেই মানুষ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হচ্ছেন। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে হৃদ্রোগ এবং স্ট্রোক হতে পারে যেকোন সময়। উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করতে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে শরীরচর্চা এবং খাদ্যাভ্যাসের ভূমিকা অনেক বেশিই গুরুত্বপূর্ণ।
এমন বেশ কিছু খাবার এবং খাদ্য উপকরণ আছে, যেগুলো রসনার তৃপ্তি মেটায় ঠিকই কিন্তু সেগুলোর কারণে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তবে ঝুঁকিটা জানা না থাকায় অনেকেই না জেনে-বুঝে প্রায়ই এসব খাবার গ্রহণ করেন। ফলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে।
যেকোনো রকমের বাড়তি লবণ
সুস্থ থাকতে হলে পরিমিত লবণ খেতে হবে। রান্নায় ব্যবহৃত স্বাভাবিক লবণেই দেহের রোজকার চাহিদা মিটে যায়। পাতে বাড়তি লবণ খাওয়ার অভ্যাসটি ভালো নয়। কাঁচা লবণ, ভাজা লবণ, বিটলবণ, টেস্টিং সল্ট, পিংক সল্ট বা সৈন্ধব লবণ সবই আদতে সোডিয়াম। তাই বাড়তি লবণ হিসেবে কোনোটিই খাওয়া যাবে না। খুব ঘাম বা ডায়রিয়া না হলে কোনো পানীয়েও লবণ যোগ করা উচিত নয়।
চানাচুর, চিপস, নোনতা বিস্কুট, সল্টেড বাটার
এসব খাবারে অনেকটা বাড়তি লবণ যোগ করা থাকে। অর্থাৎ এসব খাবারের মাধ্যমেও বাড়তি সোডিয়াম দেহে ঢোকে। ফলে রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে। শিশুরা চিপস বা চানাচুরের মতো খাবার পছন্দ করে। তাদেরও সীমিত মাত্রায় এসব খাবার দিন।
ইনস্ট্যান্ট নুডলস এবং অন্যান্য প্রক্রিয়াজাত খাবার
ইনস্ট্যান্ট নুডলস সসেজ, প্রক্রিয়াজাত মাংস, টিনজাত খাবার প্রভৃতিতে অনেকটা লবণ থাকে। এসব খাবারও কম খাওয়াই ভালো। শুঁটকিতেও লবণ দেওয়া হয়। তাই শুঁটকি খাওয়ার সময় আর লবণ যোগ করবেন না। আর রান্নার আগে অবশ্যই খুব ভালোভাবে ধুয়ে নিন। এসব নিয়ম মেনে খাওয়া হলে শুঁটকির কারণে খুব বেশি রক্তচাপ বাড়ে না।
তেল ও চর্বিজাতীয় কিছু খাবার
ফাস্ট ফুড এবং ডুবো তেলে ভাজা খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। এসব খাবারে স্নেহপদার্থের মাত্রা বেশি থাকে। প্রায়ই এ ধরনের খাবার খাওয়া হলে রক্তে খারাপ চর্বির মাত্রা বেড়ে যায়। রক্তনালির প্রাচীরে জমা হতে থাকে এসব চর্বি। এভাবেই বাড়ে রক্তচাপ। বারবার ব্যবহৃত তেলে ভাজা খাবার খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। এসব খাবার স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
সস, আচার, কেচাপ, কাসুন্দি
বারবিকিউ সস, স্টেক সস, হোয়াইট সস, চিলি সস, তেঁতুলের সস, টমেটো সস বা কেচাপে খাবার হয়ে ওঠে সুস্বাদু। আবার কাঁচা আম বা পেয়ারার মতো ফলে কাসুন্দি মাখিয়ে মুখরোচক উপায়ে খান অনেকেই। নানা রকম আচারও পছন্দ করেন বহু মানুষ। কিন্তু মুশকিল হলো, যেকোনো ধরনের সস বা কেচাপ, আচার এবং কাসুন্দিতে বাড়তি লবণ থাকে। ফলে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার ভয় থাকে। বুঝতেই পারছেন, এসব খাদ্য উপাদান সুস্বাদু হলেও স্বাস্থ্যকর নয়। সূত্র: মায়ো ক্লিনিক