প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে মামলা সংক্রান্ত জটিলতা কাটলে সারাদেশে প্রায় ৩২ হাজার সহকারী শিক্ষককে পদোন্নতি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
সোমবার (৪ আগস্ট) সকালে রংপুর শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন বিষয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভার আগে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, একটি চলমান মামলার কারণে দীর্ঘদিন ধরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পদোন্নতি আটকে আছে। মামলা নিষ্পত্তি হলেই ৩২ হাজার সহকারী শিক্ষককে পদোন্নতি দেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, শিক্ষক সংকট মোকাবিলায় ১৭ হাজার শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পিএসসির মাধ্যমে ৩ হাজার প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। একই গ্রেডে (১০ম) প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক থাকলেও প্রশাসনিক সমস্যা হবে না বলে মনে করেন উপদেষ্টা। প্রশাসনের বিভিন্ন পদেও নিয়ন্ত্রণকারী ও নিয়ন্ত্রিত ব্যক্তি একই গ্রেডে থাকেন। বেতন কাঠামো নির্ধারণে বেতন কমিশন বিষয়টি বিবেচনা করছে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তি বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, সরকারের লক্ষ্য হলো প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন, শুধুমাত্র বৃত্তি নয়। সরকারি বিদ্যালয় সবার জন্য উন্মুক্ত। কেউ যদি বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে চায়, তবে তাকে সরকারি স্কুলে ভর্তি হতে হবে।
ডা. বিধান রঞ্জন বলেন, শিক্ষার্থীদের শেখার অগ্রগতি যাচাইয়ে পরীক্ষা প্রয়োজন। আমরা নম্বর না দেখে মূল্যায়ন করি, শিক্ষার্থী মাতৃভাষায় পড়তে, লিখতে, বুঝতে ও ভাব প্রকাশে সক্ষম কি না। যারা পিছিয়ে রয়েছে, তাদের জন্য আলাদা ক্লাসের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং ডিসেম্বর নাগাদ এ কার্যক্রমের মূল্যায়ন করা হবে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুষ্টিকর খাবার প্রদানে সরকার স্কুল ফিডিং কার্যক্রম চালু করতে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ১৫০টি উপজেলায় সব স্কুলে এবং কক্সবাজার ও বান্দরবনের সব উপজেলায় এই কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে। মোট ১৬৫ উপজেলায় এই প্রকল্প চালু হবে। ইতোমধ্যে ক্রয় প্রক্রিয়া ও বাস্তবায়নকারী দলের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে, সেপ্টেম্বরে প্রস্তুতি শেষ হবে বলে আশা করছি।
উল্লেখ্য, শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, স্থানীয় সরকার পরিচালক আবু জাফর, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নুর মো. শামসুজ্জামান ও পরিচালক মো. কামরুল হাসান।
