নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা ২২টি দলের মাঠপর্যায়ের তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এদের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দপ্তরের কার্যকারিতা এবং সংগঠন কাঠামোর বাস্তবতা সরেজমিনে যাচাই করে আগামী ৩১ আগস্ট এর মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সংস্থাটি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) ইসির সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় এই তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা ২২টি দলের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অফিস ও কার্যক্রম সরেজমিন তদন্ত করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন পাঠাতে হবে।
নির্দেশনায় আরও উল্লেখ করা হয়, জেলা পর্যায়ে তদন্তের দায়িত্বে থাকবেন সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অথবা অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। তারা নির্ধারিত চেকলিস্ট অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সব কাগজপত্রে পৃষ্ঠা নম্বর দিয়ে সিলগালা করে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে জমা দেবেন। আঞ্চলিক কর্মকর্তারা রাজনৈতিক দলভিত্তিক খাম একত্রিত করে কমিশন সচিবালয়ে গোপনীয়ভাবে পাঠাবেন।
একইভাবে, উপজেলা পর্যায়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা। তারা প্রতিবেদন সিলগালা করে জেলা পর্যায়ে জমা দেবেন এবং জেলা পর্যায়ে এসব খাম দলভিত্তিক একত্রিত করে কমিশনে পাঠানো হবে।
নিবন্ধন যাচাইয়ের জন্য তদন্তাধীন ২২টি রাজনৈতিক দল হলো-
ফরোয়ার্ড পার্টি: এই দলের মহাসচিব হিসেবে রয়েছেন মো. মাহবুবুল আলম চৌধুরী।
আমজনতার দল: কর্নেল মিয়া মসিউজ্জামান এই দলের সভাপতি।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি): চেয়ারম্যান এম এম শাহাদাত।
বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি): মো. নুরুল হক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি: মহাসচিব মুহাম্মদ মুসা বিন ইযহার।
বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী): এই দলের সমন্বয়ক মাসুদ রানা।
মৌলিক বাংলা: সাধারণ সম্পাদক ফুয়াদ সাকী।
বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি: চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসাইন।
জাতীয় জনতা পার্টি: অ্যাডভোকেট মো. হুমায়ুন কবীর আকন এই দলের চেয়ারম্যান।
মজনতার দল: ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. শামীম কামাল চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন।
জনতা পার্টি বাংলাদেশ: ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন এ বি এম ওয়ালিউর রহমান খান।
বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি: আহ্বায়ক মোহাম্মদ রফিকুল আমিন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি): মো. নাহিদ ইসলাম এই দলের আহ্বায়ক।
বাংলাদেশ জাতীয় লীগ: চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম।
ভাসানী জনশক্তি পাটি: শেখ মো. রফিকুল ইসলাম এই দলের চেয়ারম্যান।
বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ: সভাপতি মো. আতিকুর রহমান (রাজা)।
বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-সিপিবি (এম): সভাপতি আব্দুস সামাদ সুজন।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-শাহজাহান সিরাজ): এই দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি: মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম।
বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস): সভাপতি মো. হাসান।
বাংলাদেশ সলুশন পার্টি: শামছুল হক এই দলের সভাপতি।
নতুন বাংলাদেশ পার্টি: চেয়ারম্যান মেজর (অব.) সিকদার আনিসুর রহমান।
ইসি সূত্র জানায়, নিবন্ধন চেয়ে মোট ১৪৩টি রাজনৈতিক দল আবেদন করেছিল। এসব আবেদনের যাচাই-বাছাই শেষে দেখা যায়, ৮৪টি দল তথ্য ঘাটতি পূরণ করে কাগজপত্র জমা দেয়। তবে এর মধ্যে ৬২টি দল শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়, ৬টি দল সময় বাড়ানোর আবেদন করলেও বিধি অনুযায়ী সেই সুযোগ নেই এবং ১টি দল নির্ধারিত সময়ের পরে কাগজপত্র জমা দেয়। এসব কারণে ১২১টি দলের নিবন্ধন আবেদন বাতিল হতে যাচ্ছে।
বর্তমান আইনে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য একটি দলের কেন্দ্রীয় কমিটি, দেশের এক-তৃতীয়াংশ জেলায় কমিটি ও ১০০টি উপজেলায় ২০০ ভোটারের সমর্থনসহ কমিটি থাকা বাধ্যতামূলক। এছাড়া সংসদে প্রতিনিধিত্ব বা সর্বশেষ নির্বাচনে ন্যূনতম ৫ শতাংশ ভোট পাওয়ার মতো অতিরিক্ত যোগ্যতাও বিবেচনায় নেওয়া হয়।
নতুন এই ২২টি দলের মাঠপর্যায়ের প্রতিবেদন পরবর্তী ধাপে নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
বক্তব্য ভুল প্রমাণ করতে পারলে ক্ষমা চাইবো: ফজলুর রহমান
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে বলে মনে হচ্ছে না: নাহিদ