আজ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শুভ ‘প্রবারণা পূর্ণিমা’। এটি ‘আশ্বিনী পূর্ণিমা’ নামেও পরিচিত। আত্মশুদ্ধি অর্জনের মধ্য দিয়ে অশুভকে বর্জন করে সত্য ও সুন্দরকে বরণের আয়োজন এই প্রবারণা।
সোমবার (৬ অক্টোবর) রাত ১১টা ৫৪ মিনিটে পূর্ণিমা তিথি শুরু হয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৩ মিনিটে শেষ হবে।
মহামতি গৌতম বুদ্ধ নির্বাণ লাভের পর আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে অশ্বিনী পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত তিন মাস প্রবারণা ব্রত পালন করেন। সেই থেকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বর্ষাবাস শেষে এই দিনটি পালন করে আসছেন।
বৌদ্ধদের বিশ্বাস, এই পূর্ণিমা তিথিতে গৌতম বুদ্ধ তাবতিংস স্বর্গে মাতৃদেবীকে অভিধর্ম দেশনার পর ভারতের সাংকাশ্য নগরে অবতরণ করেন। মানবজাতির সুখ, শান্তি ও কল্যাণের লক্ষ্যে তিনি ভিক্ষু সংঘকে স্বধর্ম প্রচারের নির্দেশ দেন। এই দিনেই তার তিন মাসের বর্ষাবাসের পরিসমাপ্তি ঘটে।
বৌদ্ধ ধর্মীয় লেখক সুদর্শন বড়ুয়া বলেন, আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাব্রত শেষে প্রবারণা উৎসবের আয়োজন করা হয় বৌদ্ধ পল্লীতে। প্রবারণা অর্থ আত্মসমর্পণ ও আত্মশুদ্ধির অনুষ্ঠান।
প্রবারণা পূর্ণিমার পরদিনই শুরু হবে বৌদ্ধদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ কঠিন চীবর দান’। প্রতিবছর আষাঢ় মাসে প্রবারণা পূর্ণিমার পরদিন থেকে এক মাস ধরে দেশের প্রতিটি বৌদ্ধ বিহারে এই উৎসব চলে। প্রতিবছর শুভ প্রবারণার মধ্য দিয়ে বিহারে বিহারে দুই দিনব্যাপী এ উৎসবের আয়োজন করা হয়, যা মাসজুড়ে চলতে থাকে।
প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশন রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারে দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে
- জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন
- ভিক্ষু সংঘের প্রাতরাশ, মঙ্গলসূত্র পাঠ, বুদ্ধপূজা
- পঞ্চশীল ও অষ্টাঙ্গ উপসথ শীলগ্রহণ, মহাসংসদান
- অতিথি আপ্যায়ন, পবিত্র ত্রিপিটক থেকে পাঠ, আলোচনাসভা
- প্রদীপ পূজা, আলোকসজ্জা এবং বিশ্বশান্তি কামনায় সম্মিলিত বুদ্ধোপাসনা
- ফানুস উড্ডয়ন ও বুদ্ধকীর্তন
এছাড়াও, প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাণী দিয়েছেন।
