বিশ্ব ক্রিকেটে প্রতিটি প্রজন্ম কিছু নাম রেখে যায়, যাদের কথা বলা হয় শ্রদ্ধা নিয়ে, যাদের দেখেই বেড়ে ওঠে নতুন তারকারা। আইসিসির হল অব ফেম সেই অনন্য নামগুলোকে চিরকালীন মর্যাদার আসনে বসায়। ২০২৫ সালে ক্রিকেটের এই সর্বোচ্চ সম্মান পেয়েছেন সাতজন কিংবদন্তি-যারা মাঠে কেবল ম্যাচ জেতাননি, বদলে দিয়েছেন দেশের ক্রিকেট সংস্কৃতি।
ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে এমন কোনো স্বর্ণপদক নেই, যা মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে জেতা হয়নি। তার অধীনে ভারত জিতেছে তিন ধরনের আইসিসি ট্রফি—২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ, ও ২০১৩ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। শুধু একজন সফল অধিনায়ক নন, তিনি ছিলেন কৌশলী ফিনিশার, উইকেটপেছনে নির্ভরযোগ্য সৈনিক। হল অব ফেমে জায়গা পাওয়া ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র।
দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে সফল টেস্ট অধিনায়ক স্মিথ নিজের ক্যারিয়ারে ১০০টিরও বেশি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন-একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে। তার অধীনে প্রোটিয়ারা টেস্টে পেয়েছে ৫৩টি জয়। যখন দক্ষিণ আফ্রিকা ছিল রূপান্তরের পথে, স্মিথ তখন ছিলেন ক্রিকেটীয় স্থিরতার প্রতীক।
অস্ট্রেলিয়ার পেসি উইকেট আর আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের যুগে ম্যাথু হেইডেন ছিলেন এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত। ২০০৭ বিশ্বকাপে তিনটি সেঞ্চুরি তার সামর্থ্যের নিদর্শন। তাঁর ব্যাটিং দর্শনে ছিল আত্মবিশ্বাস, ভয়ডরহীনতা, এবং ম্যাচ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা।
পাকিস্তানের নারী ক্রিকেটে সানা মীর ছিলেন কেবল একজন খেলোয়াড় নন, ছিলেন আন্দোলনের প্রতীক। প্রথম পাকিস্তানি নারী হিসেবে আইসিসি হল অব ফেমে জায়গা পাওয়ার মাধ্যমে তিনি বর্ণনা করলেন, লড়াই থেকে সম্মানে পৌঁছানো সম্ভব। তার নেতৃত্বে পাকিস্তান দুইবার এশিয়ান গেমসে স্বর্ণপদক জিতেছে, নিজে একসময় উঠেছিলেন আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে বোলারদের শীর্ষে।
হাশিম আমলা ছিলেন তেমনই একজন ব্যাটার, যিনি তার স্ট্রোকের মাধুর্য দিয়ে প্রতিপক্ষকে কাবু করেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫৫টির বেশি সেঞ্চুরি, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান-তার নাম ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবেই।
ড্যানিয়েল ভেট্টোরি ছিলেন এক ব্যতিক্রমধর্মী স্পিনার, যিনি একই সঙ্গে ব্যাট হাতে দলকে উদ্ধার করতেন। ৪০০০ রান ও ৩০০ উইকেট টেস্টে, যা আছে মাত্র তিনজন ক্রিকেটারের। ২০০৯ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির রানার্সআপ কিউই দলের নেতৃত্ব ছিল তার হাতে।
নারী ক্রিকেটে উইকেটকিপিংকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন ইংল্যান্ডের সারাহ টেলর। অসাধারণ রিফ্লেক্স, নিখুঁত গ্লাভস ও মাঠে উপস্থিতির কারণে তার ২৩২ আন্তর্জাতিক ডিসমিসাল এক ইতিহাস। ২০০৯ ও ২০১৭-দুই বিশ্বকাপ জয়েই তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল।
