বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের ভিত্তি জাতীয় লিগ। দেশের প্রথম শ্রেণির চার দিনের ম্যাচ এবং এনসিএল টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে এই আসরই গড়ে দেয় জাতীয় দলের জন্য খেলোয়াড়দের পাইপলাইন। আটটি বিভাগীয় দলের ১২০ জন ক্রিকেটারকে নিয়ে আয়োজিত এই টুর্নামেন্টের আয়োজন ক্রমশই ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে।
২০১২ সালে জাতীয় লিগ আয়োজনের জন্য বিসিবির খরচ ছিল প্রায় ৪ কোটি টাকা। সর্বশেষ ২০২৪-২৫ মৌসুমে সেই ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটিরও বেশি-অর্থাৎ গত ১৩ বছরে বেড়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। শুধু খেলোয়াড়দের থাকা, খাওয়া ও দৈনিক ভাতার জন্য গত মৌসুমেই প্রতিদিন প্রায় ১১ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। লিগ শুরুর আগে প্রতিটি দলকে প্রস্তুতি ফি হিসেবে সাড়ে ৯ লাখ টাকা করে দেওয়া হয়, সঙ্গে সরবরাহ করা হয় ম্যাচের জার্সি।
খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিকও বেড়েছে। দৈনিক ভাতা ২,৫০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩,০০০ টাকা। টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ফি ২৫ হাজার থেকে বেড়ে ৪০ হাজার টাকা, চার দিনের ম্যাচ ফি ৬০ হাজার থেকে বেড়ে ৭৫ হাজার টাকা হয়েছে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে চুক্তিবদ্ধ ১০০ জন ক্রিকেটারের মাসিক বেতনও বেড়েছে—‘এ’ গ্রেডে ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার, ‘বি’ গ্রেডে ৩০ হাজার থেকে ৩৫ হাজার, আর ‘সি’ গ্রেডে ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা। যদিও এই বেতন জাতীয় লিগের বাজেটের অন্তর্ভুক্ত নয়।
পুরস্কারের অঙ্কও কম নয়। চার দিনের ম্যাচের চ্যাম্পিয়ন দল পায় ৩০ লাখ ও রানার্সআপ ১৫ লাখ টাকা। টি-টোয়েন্টিতে চ্যাম্পিয়ন পায় ১৫ লাখ, রানার্সআপ সাড়ে ৭ লাখ টাকা। চার দিনের ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচ পান ৩০ হাজার, টি-টোয়েন্টিতে পান ২০ হাজার টাকা। চার দিনের ম্যাচ জিতলে ৮০ হাজার টাকা উইনিং বোনাস দেওয়া হয়। এছাড়া টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়, সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ও সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি প্রত্যেকে পান ১ লাখ টাকা।
তবে এত খরচের বড় অংশই বহন করে বিসিবি। স্পনসর থাকলেও খরচের মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশই আসে পৃষ্ঠপোষকদের কাছ থেকে, বাকি অংশ বোর্ডের নিজস্ব তহবিল থেকে মেটাতে হয়।
আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর শুরু হবে জাতীয় লিগের ২৭তম আসরের টি-টোয়েন্টি পর্ব, আর অক্টোবরের মাঝামাঝি শুরু হবে চার দিনের আসর।
