ম্যারাডোনার সাবেক দেহরক্ষী গ্রেপ্তার

আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২৫, ০৬:৫৪ পিএম

২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান দিয়েগো ম্যারাডোনা। তার চিকিৎসায় যে ৮জন নিয়োজিত ছিলেন, তাদের মধ্যে ৭ জনের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে আদালতে মামলা চলছে। এ মামলায় আদালতে মিথ্যা বলা ও তথ্য গোপন করার দায়ে ম্যারাডোনার সাবেক দেহরক্ষীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ম্যারাডোনার সাবেক দেহরক্ষী হুলিও সিজার কোরেয়া মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন কি না, তা তদন্ত করার নির্দেশ দেন আদালত। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে। ম্যারাডোনাকে যারা পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছিলেন, তাদের মধ্যে হুলিও সিজার একজন।  

গত মঙ্গলবার আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় হুলিও সিজার জানান, কক্ষে ঢুকে তিনি দেখেন নার্স গিসেলা মাদ্রিদ ও মনোবিদ অগাস্তিনা কোসাচভ ম্যারাডোনাকে সিপিআর (কৃত্রিম শ্বাস দেওয়ার প্রক্রিয়া) দিচ্ছেন। তিনি আরও জানান, কোসাচভ ম্যারাডোনার মুখে মুখ লাগিয়ে কৃত্রিম শ্বাস দেওয়ার চেষ্টা করেন। আর এ মামলায় গিসেলা ও কোসাচভ বিবাদী পক্ষ।
 
নিউরোসার্জন লিওপোল্ড লুকুর সঙ্গে কথা হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে মিথ্যা বলেছেন হুলিও, বিচারকার্য পরিচালনার পক্ষ থেকে তাকে সতর্কও করা হয়। ফেরারি বলেন, ‘লুকু ও কোরেয়ার মধ্যে অনেক কথা হয়েছে। যেখান থেকে আমরা বুঝতে পারি, দুজনের সম্পর্কও বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শী কথা হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।’ 
 
ম্যারাডোনার জীবনে শেষ চার বছর তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেছেন লুকু। তার মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ আগে মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জমাট রক্ত অপসারণ করেছিলেন এই চিকিৎসক। 

ভাই বোন ও ম্যারাডোনার বোনদের সঙ্গে ম্যারাডোনার মেয়ে জানা এই মামলার অন্যতম বাদী। সাড়ে চার বছর আগের ঘটনা স্মরণ করে তিনি আদালতকে বলেছেন, ‘আমি ও আমার বোন জিয়ানিন্না বাবাকে দেখতে গিয়েছিলাম। তবে তাঁর বাবার অবস্থা খুব ভালো ছিল না। ম্যারাডোনার মনোবিজ্ঞানী আমাদের সেই বাড়িতে (ম্যারাডোনার বাড়ি) যেতে নিষেধ করেছিলেন যতক্ষণ না তিনি (ম্যারাডোনা) পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চান। অন্যান্য সাক্ষীদের বর্ণনা শুনে যা বুঝলাম, বাড়িতে কোনো চিকিৎসাসামগ্রী ছিল না।’

ম্যারাডোনার চিকিৎসায় নিয়োজিত আটজনের মধ্যে সাতজনের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে আছেন এক নিউরোসার্জন, এক মনোরোগবিদ, এক মনোবিজ্ঞানী, এক মেডিকেল কো-অর্ডিনেটর, এক নার্স কো-অর্ডিনেটর, এক চিকিৎসক এবং রাতের বেলার এক নার্স। দিনের বেলায় ম্যারাডোনাকে যে নার্স দেখাশোনা করতেন, তার বিচার আলাদাভাবে হবে। যন্ত্রণাকাতর সময়ে ম্যারাডোনাকে ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল বলে কৌঁসুলিদের অভিযোগ। দোষী সাব্যস্ত হলে ৮ থেকে ২৫ বছরের জেল হতে পারে অভিযুক্তদের। জুলাই পর্যন্ত এই মামলা চলতে পারে।

হৃদরোগের কারণে ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর ৬০ বছর বয়সে মারা যান ম্যারাডোনা। তার মস্তিষ্কে রক্ত-জমাট বেঁধেছিল বলে জানা গেছে। 

Fj/br
আরও পড়ুন