ঢাকা
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

একুশে পদক পাচ্ছেন 'অভ্র' কি-বোর্ড উদ্ভাবক মেহেদী

দীর্ঘ সময় তার এই অবিস্মরণীয় অবদান নিয়ে আলোচনা হলেও স্বীকৃতি মেলেনি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রচুর আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে।

আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫৯ এএম

বিশ্বায়নের এই যুগে ডিজিটাল মাধ্যমে বাংলা ভাষায় লেখতে পারার জনপ্রিয় একটি সফটওয়্যার ‘অভ্র’ কিবোর্ড। আর এটির আবিষ্কারক একজন চিকিৎসক, যার নাম মেহেদী হাসান খান। কিন্তু দীর্ঘ সময় তার এই অবিস্মরণীয় অবদান নিয়ে আলোচনা হলেও স্বীকৃতি মেলেনি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রচুর আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। অবশেষে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিভাগে  ২০২৫ সালের একুশে পদক পুরস্কার পাচ্ছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে একুশে পদক প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

মেহেদী হাসান খানের জন্ম ঢাকায়। তিনি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক এবং নটর ডেম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন।

তার সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের প্রতি ঝোঁক ছিল ছোটবেলা থেকেই। ২০০৩ সালে তিনি ইউনিকোড ও এএনএসআই সমর্থিত বাংলা লেখার জন্য ফ্রি ও ওপেন সোর্স সফটওয়্যার অভ্র কিবোর্ড তৈরি করেন।

বিশ্বায়নের এই যুগে ডিজিটাল মাধ্যমে বাংলা ভাষায় লেখতে পারার জনপ্রিয় একটি সফটওয়্যার ‘অভ্র’ কিবোর্ড। আর এটির আবিষ্কারক একজন চিকিৎসক, যার নাম মেহেদী হাসান খান। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগে ২০২৫ সালের একুশে পদক পুরস্কার পাচ্ছেন তিনি। কিন্তু দীর্ঘ সময় তার এই অবিস্মরণীয় অবদান নিয়ে আলোচনা হলেও স্বীকৃতি মেলেনি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রচুর আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। অবশেষে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিভাগে একুশে পদক পেতে যাচ্ছেন তিনি।

শুরুর দিকে, ইউনিকোডভিত্তিক বাংলা লেখার জন্য উপযুক্ত সফটওয়্যার না থাকায় তিনি নিজেই একটি সমাধান তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। প্রথমে মাইক্রোসফট ডট নেট ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করে একটি প্রোটোটাইপ তৈরি করেন। কিন্তু সেটি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। অবশেষে, ক্ল্যাসিক ভিজ্যুয়াল বেসিকের ওপর ভিত্তি করে নতুন একটি সংস্করণ তৈরি করেন, যা বাংলা লেখার জন্য আদর্শ হয়ে ওঠে।

২০০৩ সালের ২৬ মার্চ প্রথমবারের মতো অভ্র কী-বোর্ড উন্মুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ওমিক্রনল্যাব থেকে এটি মুক্তি দেওয়া হয়। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজেও অভ্র ব্যবহার করেছে।

অভ্র সফটওয়্যারের কারণে কম্পিউটারে বাংলা লেখা সহজ হয়েছে। এর ফলে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত সবাই এটি ব্যবহার করতে শুরু করে। অভ্র'র অন্যতম জনপ্রিয়তা এর ওপেন সোর্স প্রকৃতি এবং কাস্টম লেআউট সুবিধার জন্য।

অভ্র টিমের সদস্যদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন রিফাত উন নবী, সিয়াম রুপালী ফন্টের জনক সিয়াম, সারিম, ভারতের নিপন এবং মেহেদীর সহধর্মিণী সুমাইয়া নাজমুন। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অভ্র আজকের অবস্থানে পৌঁছেছে।

অভ্র কিবোর্ড বিজয়ের তুলনায় অধিক ব্যবহারকারী-বান্ধব এবং ওপেন সোর্স হওয়ায় বেশি জনপ্রিয়তা পায়। এটি ফ্রি হওয়ায় ব্যবহারকারীরা সহজেই ব্যবহার করতে পারেন। অপরদিকে বিজয় কিবোর্ড নির্দিষ্ট লাইসেন্সের আওতায় থাকে।

অভ্র কী-বোর্ডের জন্য ২০১১ সালে মেহেদী হাসান খান তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশেষ অবদানের জন্য বেসিস পুরস্কার পান। ২০২৫ সালে একুশে পদকের স্বীকৃতি তার দীর্ঘ পরিশ্রমের ফল। 

FJ/NC
আরও পড়ুন