ঢাকা
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

সিন্ডিকেটের ছকে বাঁধা পেঁয়াজের বাজার, লাফিয়ে বাড়ছে দাম

আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৫৫ পিএম

লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদনের পরেও হঠাৎ অস্থির পেঁয়াজের বাজার। বাজারে এখন পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট। সিন্ডিকেটের পুরোনো ছকে বাঁধা পড়ে গেছেন ভোক্তা সাধারণ। সরবরাহ কমের অজুহাতে একদিনের ব্যবধানে কেজিতে ৩০-৪০ টাকা বেড়ে গেছে দাম। 

কিছুদিন পরই নতুন পেঁয়াজে ভরে উঠবে বাজার। পাশাপাশি এখনও দেশে মজুত আছে এক লাখ টনের বেশি পুরোনো পেঁয়াজ। পর্যপ্ত মজুদ থাকা স্বত্বেও দেশের খুচরা বাজারে দুই দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের কেজিপ্রতি দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

দিনাজপুরের হিলিতে একদিন আগেও যেখানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা দরে, সেখানে বর্তমানে তা বেড়ে ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা দরে। পেঁয়াজের দামে এমন আকস্মিক লাফে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন।

হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতারা বলছেন, দেশি পেঁয়াজের মৌসুম শেষের দিকে হওয়ায় বাজারে এর সরবরাহ অনেকটা কমে গেছে। এর ফলে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমের কারণে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। একদিন আগে মোকামে যে পেঁয়াজ প্রতি মণ ৩ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ৩০০ টাকা ছিল, সেটি এখন বেড়ে ৪ হাজার ২০০ থেকে ৪ হাজার ৩০০ টাকায় উঠেছে। মণ প্রতি ১ হাজার টাকা করে বেড়ে গেছে পেঁয়াজের দাম। বাড়তি দামে কিনতে হওয়ায় আমাদেরকেও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। 

বিক্রেতারা বলছেন, নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ উঠতে শুরু করলেও চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমের কারণে দাম বাড়তি। তবে, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলে দাম কমে আসবে বলে দাবি তাদের।

ব্যবসায়ীদের কথাতেই স্পষ্ট, সরবরাহ কম দেখিয়ে সরকারকে আমদানির অনুমতি দিতে চাপ প্রয়োগের কৌশল হাতে নিয়েছেন তারা। 

অসাধুরা ব্যবসায়ীরা মূলত পেঁয়াজ নিয়ে এই ছক তৈরি করেন অক্টোবর থেকেই। প্রতি বছরই এই সময়ে ব্যবসায়ীদের আঁকা ছকের ফাঁদে পড়েন ভোক্তাসাধারণ; বাজারে পণ্যটি কিনতে এসে পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। আর এই খেলায় নীরব দর্শকের ভূমিকাতেই থাকে প্রশাসন।

এদিকে সিন্ডিকেটের এই প্রভাব পড়েছে রাজধানী ঢাকাতেও। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকায়। এদিন নয়াবাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকা। রামপুরা কাঁচাবাজারে বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা ও জিনজিরা কাঁচাবাজারে এই পেঁয়াজ ১৪০-১৬০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। 

অথচ, দুই দিন আগেই প্রতিকেজি পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ১১০ টাকা ছিল এসব বাজারে। আর অক্টোবরের শেষদিকে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের খুচরা দাম ছিল ৭০ টাকা। সেপ্টেম্বরে কেজি প্রতি বিক্রি হয়েছে ৬০-৬৫ টাকায়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংয়ের অতিরিক্ত পরিচালক (মনিটরিং ও বাস্তবায়ন) ড. জামাল উদ্দীন বলেন, প্রকৃতপক্ষে বাজারে সরবরাহের কোনো ঘাটতি নেই। আমদানির অনুমতি দিতে সরকারকে বাধ্য করতেই সিন্ডিকেটচক্র কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়াচ্ছে। অথচ, এখনও এক লাখ টনেরও বেশি পুরোনো পেঁয়াজ মজুত আছে।

AHA
আরও পড়ুন