ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ভারতের অস্ত্র উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদের উৎপাদন বাড়িয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ বৃহস্পতিবার (৮ মে) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে ভারতের প্রতিরক্ষা শিল্পের শীর্ষ কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে ভারতের অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো পূর্ব নির্ধারিত উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ শতাংশ বেশি উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে কোম্পানিগুলোর উৎপাদন কার্যক্রমে ব্যস্ততাও বেড়ে গেছে।
আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষণ বলছে, ২২ এপ্রিলের পেহেলগাম হামলার পর মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে ভারতীয় প্রতিরক্ষা শিল্পের মার্কেট ভ্যালু গড়ে ৫০০ কোটি ডলার বেড়েছে।
গত ২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় সন্ত্রাসীরা স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে হামলা চালিয়ে ২৬ জন হিন্দু পর্যটককে হত্যা করে। এ ঘটনায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
হামলার জবাবে ভারত সিন্ধু নদ পানি বণ্টনচুক্তি পর্যালোচনা, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিলসহ বিভিন্ন কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে। পাল্টা হিসেবে পাকিস্তান ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধ এবং ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা বাতিলসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়।
এর মধ্যে, ভারত মঙ্গলবার (৬ মে) পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরসহ বিভিন্ন এলাকায় ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে এক সংক্ষিপ্ত সেনা অভিযান পরিচালনা করে। নয়াদিল্লি জানিয়েছে, এতে ৭০ জন নিহত হয়েছে, যদিও পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী নিহতের সংখ্যা ৩১ জন এবং আহত হয়েছে ৫৭ জন।
সবশেষ, বৃহস্পতিবার (৮ মে) পাকিস্তান জম্মু ও রাজস্থানের জয়সালমিরে ড্রোন হামলার চেষ্টা চালায়, তবে ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সেই হামলা ব্যর্থ করে দিয়েছে।
চলমান উত্তেজনা ও পাল্টাপাল্টি হামলা-প্রতিহামলার আবহে দুই দেশের সম্পর্ক ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। সামরিক উৎপাদন বৃদ্ধি পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শন ও সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছে।
