বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্ভাব্য নির্বাচনি জোট বা সমঝোতা নিয়ে দেশজুড়ে বইছে আলোচনার ঝড়। এই প্রেক্ষাপটে এনসিপির ভেতরে ও বাইরে তৈরি হওয়া বিতর্কের ব্যাখ্যা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে দলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, মূলত রাষ্ট্র সংস্কার ও পুনর্গঠনের প্রশ্নেই জামায়াতের সঙ্গে এনসিপির রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি হয়েছে।
আখতার হোসেন তার পোস্টে উল্লেখ করেন, সংস্কারের প্রশ্নে বিএনপির সঙ্গে অন্যান্য দলের মতভিন্নতা দেখা দিলেও এনসিপি, জামায়াত এবং আরও কিছু দল স্বাভাবিকভাবেই একমত হয়েছে। তিনি বলেন, “দেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলার রাজনৈতিক অঙ্গীকারকেই আমরা নির্বাচনি সমঝোতার প্রধানতম বিবেচ্য বিষয় হিসেবে মূল্যায়ন করছি।”
তবে জামায়াতের সঙ্গে এই জোটের খবরে এনসিপির অভ্যন্তরে তীব্র অসন্তোষ ও বিদ্রোহ দেখা দিয়েছে। শনিবার দলের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্তত ৩০ জন জ্যেষ্ঠ নেতা এই সমঝোতার বিরোধিতা করে আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। তারা এই উদ্যোগকে ‘জাতির সঙ্গে প্রতারণা’ এবং ‘আদর্শিক আত্মহত্যা’ বলে অভিহিত করেছেন।
ইতোমধ্যে দলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে পদত্যাগ করেছেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা। তিনি ঢাকা-৯ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া নুসরাত তাবাসসুম ও অর্পিতা শ্যামা দেবসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দলীয় অবস্থানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
দলীয় সূত্রমতে, এনসিপির ২১৪ জন কেন্দ্রীয় সদস্যের মধ্যে ১৮৪ জনই জামায়াতের সঙ্গে জোট গঠনের পক্ষে সায় দিয়েছেন। তবে বিরোধিতাকারী ৩০ জন নেতার মধ্যে যুগ্ম সদস্যসচিব ও কেন্দ্রীয় সংগঠকদের মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা রয়েছেন। এই অভ্যন্তরীণ সংকটের মধ্যেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে যে, যেকোনো সময় জামায়াত ও এনসিপির এই জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে।
‘জামায়াতের সঙ্গে জোটে গেলে এনসিপিকে কঠিন মূল্য দিতে হবে’
জামায়াতের সঙ্গে জোটে আপত্তি, নাহিদকে ৩০ নেতার চিঠি
জামায়াতের সঙ্গে জোটে যাচ্ছে এনসিপি, ঘোষণা আজ