ভারতসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এবং অন্যান্য দেশে ভাইরাসের এই ধরনটি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় নতুন সতর্কতা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভারত এবং ভাইরাস ছড়ানো অন্যান্য দেশে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি ঝুঁকি মোকাবেলায় সব স্থল ও বিমানবন্দরে হেলথ স্ক্রিনিং ও নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে।
সোমবার (৯ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. হালিমুর রশিদের স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়, পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশে করোনার নতুন সাব ভেরিয়েন্ট, বিশেষ করে অমিক্রন এলএফ. ৭, এক্সএফজি, জেএন-১ এবং এনবি ১.৮.১ এর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে এর সম্ভাব্য সংক্রমণ প্রতিরোধে ভারত ও অন্যান্য সংক্রামক দেশ এবং বাংলাদেশ থেকে ভারত এবং অন্যান্য সংক্রামক দেশে ভ্রমণকারী নাগরিকদের জন্য দেশের সকল স্থল, নৌ, বিমানবন্দরের আইএইচআর ডেস্কে নজরদারি জোরদার করতে হবে। পাশাপাশি ঝুঁকি মোকাবিলায় কিছু কার্যক্রম নিতে হবে।
দেশে প্রবেশের পথের জন্য নির্দেশনা
১. দেশের বিভিন্ন স্থল/নৌ/ বিমান বন্দর সমূহে আইএইচআর (IHR-2005) স্বাস্থ্য ডেস্ক সমূহে সতর্ক থাকা, হেলথ স্ক্রিনিং এবং সার্ভেল্যান্স জোরদার করুন।
২. দেশের পয়েন্টস অব এন্ট্রি সমূহে থার্মাল স্কান্যার/ ডিজিটাল হেন্ড হেল্ড থার্মোমিটারের মাধ্যমে নন টাচ টেকনিকে তাপমাত্রা নির্ণয় করুন।
৩. চিকিৎসা কাজে স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ মাস্ক, গ্লাভস এবং রোগ প্রতিরোধী পোশাক মজুত রাখুন (পিপিই)।
৪. ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য রোগ প্রতিরোধ নির্দেশনাসমূহ প্রচার করুন।
৫. জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত ভারত ও অন্যান্য আক্রান্ত দেশসমূহে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন।
সবার জন্য সাধারণ পরামর্শ
১. সাতবার প্রয়োজনমতো সাবান দিয়ে হাত ধোবেন (অন্তত ২৩ সেকেন্ড)।
২. নাক-মুখ ঢাকায় জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন।
৩. আক্রান্ত ব্যক্তি হতে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরে থাকতে হবে
৪. অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করবেন না
৫. হাঁচি-কাশির সময় বাহ/ টিস্যু/ কাপড় দিয়ে নাক মুখ ঢেকে রাখুন।
সন্দেহজনক রোগীদের ক্ষেত্রে করণীয়
১. অসুস্থ হলে ঘরে থাকুন, মারাত্মক অসুস্থ হলে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।
২. রোগীর নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে বলুন
৩. প্রয়োজন হলে আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করুন (০১৪০১-১৯৬২৯৩)
গত বৃহস্পতিবার দেশে করোনায় একজনের মৃত্যু হয়। আশঙ্কাজনক না হলেও দেশে এ রোগের প্রকোপ বাড়ছে। আইসিডিডিআরবির গবেষকেরা করোনার নতুন একটি ধরন শনাক্তের কথা বলছেন। এর নাম এক্সএফজি। এর পাশাপাশি এক্সএফসি ধরনটিও পাওয়া গেছে। দুটোই করোনার শক্তিশালী ধরন অমিক্রনের জেএন-১ ভ্যারিয়েন্টের উপধরন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। ২০২১ সালের ৫ ও ১০ আগস্ট দু-দিন করোনায় সর্বাধিক ২৬৪ জন করে মারা যান।
আবারও বাড়ছে করোনা আতঙ্ক
বাড়ছে করোনাভাইরাস, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জরুরি সতর্কবার্তা