ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

বিসিবি নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ৬, বাকিদের ভোট যুদ্ধ ৬ অক্টোবর

আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০৮ পিএম

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে উত্তাপ কমছে। যাচাই-বাছাই ও শুনানি শেষে যেখানে প্রার্থী তালিকায় নাম ছিল ৫০ জনের, সেখানে আজ ১৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। ফলে ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে ২৫টি পরিচালক পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ৩৩ জন প্রার্থী।

মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে বিসিবি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. শেখ জোবায়েদ হোসেন জানান, তিনটি ক্যাটাগরিতে মোট ১৬টি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন জমা পড়েছে এবং তার ভিত্তিতে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রত্যাহার করা প্রার্থীদের অধিকাংশই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বলে জানান তিনি। তবে এ প্রত্যাহার নিয়ে পেছনে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রভাব থাকার অভিযোগ উঠেছে, বিশেষত ক্যাটাগরি-২–এ, যেখানে ঢাকার ক্লাবগুলোকে প্রতিনিধিত্ব করা হয়।

এই ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন ১৩ জন প্রার্থী, যা স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেয় নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে। এই অংশে ৩০ জন প্রার্থীর মধ্যে এখন কেবল ১৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বী রয়ে গেছেন ১২টি পরিচালকের পদে। উল্লেখ্য, আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে ভাইকিংস ক্রিকেট একাডেমির ইফতেখার রহমানও নির্বাচন করতে পারছেন না।

ক্যাটাগরি-১–এ, অর্থাৎ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার মধ্যে গঠিত ভোটারদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হবেন ১০ জন পরিচালক। এই অংশে মোট ৭০ জন ভোটার রয়েছেন। যদিও শুরুতে ৭১ জন থাকার কথা ছিল, নরসিংদী জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে কাউন্সিলর না থাকায় সংখ্যাটি কমে গেছে। জেলা-বিভাগ ভিত্তিক ভোটে এবারও রাজনৈতিক প্রভাবের অভিযোগ উঠেছে। বলা হচ্ছে, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার পছন্দে অনেক কাউন্সিলর মনোনীত হয়েছেন। তিনি আবার বর্তমান সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।

ক্যাটাগরি-১–এ ১০টি পরিচালক পদের মধ্যে ৬ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন খুলনার আবদুর রাজ্জাক ও জুলফিকার আলী খান, বরিশালের শাখাওয়াত হোসেন এবং সিলেটের রাহাত সামস। আজ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের ফলে চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর এবং রাজশাহীর আহসান ইকবাল চৌধুরীও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এখন এই ক্যাটাগরিতে ভোট হবে শুধু ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে।

ঢাকা বিভাগ থেকে প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, নাজমূল আবেদীন এবং এস এম আবদুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদুয়ান। এদের মধ্যে দুজন নির্বাচিত হবেন। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের প্রতিটি থেকে তিনজন করে প্রার্থী থাকায় এখানেও হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোট।

অন্যদিকে ক্যাটাগরি-৩–এ ভোটার সংখ্যা ৪৫। সাবেক ক্রিকেটার ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি এই ক্যাটাগরির আওতাভুক্ত। এখানে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজউদ্দিন মো. আলমগীর। ফলে এখন দুইজন প্রার্থী-জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দেবব্রত পাল ও সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট, এই একটিমাত্র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

মনোনয়ন প্রত্যাহার করা প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছে পরিচিত কিছু নাম, যেমন তামিম ইকবাল (ওল্ড ডিওএইচএস), মাসুদুজ্জামান (মোহামেডান) এবং রফিকুল ইসলাম (ইন্দিরা ক্রীড়া চক্র)। এর মধ্যে তামিমের সরে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই বলছেন, নির্বাচন ব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন থাকায় অভিজ্ঞরা আগ্রহ হারাচ্ছেন।

আরও পড়ুন