ঝালকাঠিতে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে ইটভাটা। আর ইট তৈরির জন্য আশাপাশের এলাকার অবাধে ফসলি জমির মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে। যার ফলে সেসব জমিতে ফসল হচ্ছে না। এতে করে কৃষকরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় ফসল উৎপাদন কমে যাবে। দেখা দেবে খাদ্য সংকট, এমনটা আশঙ্কা করছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ইটভাটার জন্য জেলায় বিভিন্ন এলাকার ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। এতে করে কোনো কোনো জমি গভীর গর্তে পরিণত হয়েছে। যে কারণে জমির উর্বরতা শক্তি কমছে একই সঙ্গে আশঙ্কাজনক হারে এলাকায় চাষযোগ্য জমির পরিমাণ কমছে।

জেলা ইটভাটার মালিক সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত সাহা জানান, জেলায় প্রায় অর্ধ শত ইটভাটা রয়েছে। এসব ভাটায় বছরে আট মাস ইট তৈরি হয়। প্রতিটি ইটভাটায় ৫০ লাখ ইট প্রস্তুত করা হয়। এই ইট তৈরিতে কৃষিজমির উপরিভাগের এঁটেল মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয় মাটি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মালিকেরা এ মাটি কিনছে। আবার ভাটা মালিকরা কৃষকদের কাছ থেকে জমি লিজ নিয়ে মাটি কেটে ইট তৈরি করছেন। এক হাজার ফুটের এক গাড়ি মাটি সর্বোচ্চ এক হাজার টাকায় বিক্রি হয়। প্রতিটি ইটভাটায় বছরে চার থেকে পাঁচ লাখ ফুট মাটি ব্যবহার করা হয়। ইটভাটায় বছরে প্রায় পঞ্চাশ কোটি ফুট মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে।

তিনি জানান, জেলা সদর, রাজাপুর, নলছিটি ও কাঠালিয়া উপজেলার প্রায় ৩৫টি স্থান থেকে কৃষি জমির মাটি কাটা হচ্ছে। ঝালকাঠি সদরের চৌপালা গ্রামে খালের পাড়ে একাধিক ট্রলার করে তাতে ফসলি জমি থেকে মাটি ভরে বিভিন্ন ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
কৃষকদের অভিযোগ, গভীর করে মাটি কাটার কারণে পাশের জমিগুলো ভেঙে পড়ছে। আমরা বাধা দিলেও মাটি ব্যবসায়ীরা তা মানছে না। জমির মধ্য থেকে যেভাবে মাটি কাটা হচ্ছে তাতে এসব জমিতে আর ফসল হবে না। মাটি কাটা বন্ধ না করা হলে ফসলের উৎপাদন কমে যাবে।

ঝালকাঠির সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনুজা মন্ডল বলেন, আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। যদি কারকাছ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. মনিরুল ইসলাম জানান, কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে জমির উপরের স্তরের মাটি না কাটার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
