দিনাজপুরে শীতের অনুভূতি দিন দিন বাড়ছে। সোমবার (০২ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ, যার ফলে ভোর থেকেই চারপাশে ঘন কুয়াশা দেখা দেয়। শহর ও আশপাশের উপজেলার রাস্তাঘাটে সকাল থেকে গাড়ি চলাচলে কমে যায় গতি, কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা যায় যানবাহনগুলোকে।
এছাড়া তেতুলিয়া (পঞ্চগড়) ১২ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) ১২ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রংপুর ১৪ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সৈয়দপুর ১৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ডিমলা (নীলফামারী) ১৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বদলগাছি (নওগাঁ) ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ঈশ্বরদী (পাবনা) ১৫ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বগুড়া ১৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, চুয়াডাঙ্গা ১৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) ১৬ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যশোর ১৭ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দিনাজপুর জেলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, উত্তর থেকে আসা ঠান্ডা বাতাসের কারণে দিনাজপুরে তাপমাত্রা দ্রুত কমছে। আগামী দুই থেকে তিন দিন রাত ও ভোরের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। কুয়াশার ঘনত্বও বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, এই আবহাওয়ায় বয়স্ক, শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তিদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। ভোরের দিকে রাস্তায় কুয়াশা বেশি থাকে, তাই চালক এবং পথচারী উভয়কেই সাবধানতার সঙ্গে চলাফেরা করা উচিত।
সকালে বাজারে গরম কাপড়ের দোকানে মানুষের ভিড় দেখা গেছে। শ্রমজীবী মানুষরা শীত উপেক্ষা করেই কাজে বের হলেও ঠান্ডার কারণে কষ্ট বেড়ে গেছে।
হিলি বাস টার্মিনালে কথা হয় দৈনিক শ্রমিক রওশন আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ভোরে কাজে বের হতে খুব কষ্ট হচ্ছে। কুয়াশায় রাস্তাও ঠিকমতো দেখা যায় না। তবুও পেটের দায়ে বের হতে লাগে।
হোটেল ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, সকালবেলার ভিড় এখন একটু দেরিতে হচ্ছে। শীত বাড়ার কারণে দোকান খুললেও আগের মতো তাড়াতাড়ি লোক আসে না।
এদিকে স্কুলগামী শিক্ষার্থীরাও শীতের প্রভাব অনুভব করছে। হাকিমপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী মেহজাবিন আক্তার বলেন, সকালে কুয়াশার জন্য ঠান্ডা লাগে খুব। স্কুলে যেতে কষ্ট হয়, তবে ক্লাস বন্ধও রাখা যায় না।
হিলি হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (আরএমও) হুমায়ুন কবির বলেন, এ সময় সর্দি-কাশি, হাঁপানি ও নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই গরম কাপড় ব্যবহার, ভোরের ঠান্ডা বাতাস এড়িয়ে চলা এবং ছোট শিশুদের বাইরে কম নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।
উত্তরাঞ্চলের জেলার তাপমাত্রা কমতে শুরু করায় মানুষের দৈনন্দিন জীবনে শীতের প্রভাব স্পষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে কৃষক, দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষ যারা ভোরে কাজে বের হন, তারা সবচেয়ে বেশি শীত অনুভব করছেন।
সব মিলিয়ে ডিসেম্বরের শুরুতেই দিনাজপুরসহ পুরো উত্তরাঞ্চলে শীত তার উপস্থিতি জানান দিচ্ছে।
