ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

ছাতকে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা

আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:১২ পিএম

ঘনিয়ে আসছে সনাতন ধর্মালম্বীদের সববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। ইংরেজি চলতি মাসের শেষের দিকে ঢাকের তালে শুরু হবে এই উৎসব। শিউলি ফুলের মিষ্টি গন্ধে দুর্গাপূজার হাওয়া বইতে থাকবে পুরো দেশের মণ্ডপগুলোতে। তাই দেবী দুর্গার অনিন্দ্য সুন্দর রূপ দিতে দক্ষ (মৃৎশিল্পী) কারিগরেরা এখন দিন-রাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

ছাতকে আসন্ন দুর্গাপূজা ঘিরে সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে এরই মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের সাথে একাধিক বৈঠক করা হয়েছে।

সরেজমিনে ছাতকের মন্ডলীভোগ ও ঘোষ বাড়ি এলাকায় প্রতিমা তৈরির স্থানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, খড়, কাঠ, সুতা আর মাটি দিয়ে নিপুণ হাতে কারিগররা তৈরি করছেন প্রতিমা। পূজা যতই ঘনিয়ে আসছে, শিল্পীদের ব্যস্থতা ততটাই বাড়ছে। মন্দিরে কারিগররা ফুটিয়ে তুলছেন দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ, কার্তিক ও অসুরের প্রতিমা। কিছু কিছু মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষে হয়ে শুরু হচ্ছে রংয়ের কাজ।

এখানে করিগর বলরাম পাল ও তার ২ ছেলে পলাশ পাল ও মিটুন পাল প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন। ছাতক শহরের মহামায়া, নাথপাড়া, দাসপাড়া, গোবিন্দগঞ্জ পূর্বপাড়া, ছাতক সদর ইউনিয়নের বাউসা, দোয়ারাবাজার উপজেলার সদরের আখড়া, মংলারগাঁওসহ ১২টি মণ্ডপের জন্য প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। প্রতিমাগুলো তৈরির কাজ শেষ, এখন চলছে রংয়ের কাজ। তুলির আচড়ে সাজিয়ে তোলা হবে প্রতিমাগুলোকে।

প্রতিমা তৈরির কারিগর বলরাম পাল বলেন, অতীতে যেভাবে মানুষ মাটির তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহার করতো, সেই চাহিদা না থাকায় আমাদের প্রায় সারা বছরই অলস সময় কাটাতে হয়। তবে দুর্গাপূজা চলাকালে প্রতিমা তৈরি করে যে টাকা আয় হয়, তা দিয়ে সারা বছর সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। চলতি বছর প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। কিন্তু ক্রেতারা প্রতিমার দাম বাড়াচ্ছেন না। এতে আমাদের যে টাকা আয় হওয়ার কথা, তা আর হচ্ছে না।

ছাতক পূজা উদযাপন কমিটির পৌর শাখার সহ-সভাপতি লিটন ঘোষ বলেন, এই উৎসবে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও শুভানুধ্যায়ীরা একত্রিত হয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করেন। প্রতিবছরের মতো এবারও সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে শারদীয় দূর্গাপূজা পালন করা হবে বলে আশা করছি।

বাংলাদেশ পূজা উৎযাপন পরিষদ ছাতক উপজেলার শাখার সাধারণ সম্পাদক বাবুল রায় জানিয়েছেন, আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ইতোমধ্যেই স্থানীয় প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে আমাদের নেতৃবৃন্দের সাথে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আশা করি, সকল রাজনৈতিক দলের সার্বিক সহযোগিতায় শারদীয় দূর্গাপুজা সুন্দও ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।

চলতি বছতে উপজেলায় ১৩টি ইউনিয়নে মোট ১৭টি ও পৌরসভায় এলাকায় ১২টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

দুর্গাপূজা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক প্রস্ততি রয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শফিকুল ইসলাম খান।

উল্লেখ্য, আগামী ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্যে দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়বে। ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী, ২৯ সেপ্টেম্বর সপ্তমী, ৩০ সেপ্টেম্বর অষ্টমী, ১ অক্টোবর নবমী, ২ অক্টোবর বিজয় দশমীর মধ্যে দিয়ে ৫ দিনব্যাপী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার পরিসমাপ্তি ঘটবে।

NJ
আরও পড়ুন