প্রখ্যাত লেখক ও গবেষক বদরুদ্দীন উমর মৃত্যুর আগে দেওয়া জবানবন্দিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে প্রশাসন ও নির্বাচনের নিয়ন্ত্রণের চিত্র তুলে ধরেছেন। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বার্ধক্যজনিত জটিলতায় মৃত্যুবরণ করেন এই তাত্ত্বিক। তার দেওয়া জবানবন্দি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
পাঁচ পৃষ্ঠার জবানবন্দিতে বদরুদ্দীন উমর বর্ণনা করেছেন, কিভাবে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনা নির্বাচনের ওপর চূড়ান্ত নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, নির্বাচনের কারচুপির মাধ্যমে সরকার গঠন করা সম্ভব হয়েছে কারণ প্রশাসন, পুলিশ, আমলাতন্ত্রসহ সবকিছুকে দক্ষতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
জবানবন্দিতে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করতেন দুটি উপায়ে-
- ঘুষ, টাকা-পয়সা ও সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে।
- হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে।
এই নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে তিনি ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন, যদিও জনসমর্থনের কোনো যথাযথ ভিত্তি ছিল না। ২০১৪ সালে ভোটকেন্দ্রে সাধারণ ভোটার প্রবেশ করতে পারেননি। ২০১৮ সালের ভোট ‘রাতের ভোট’ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হয়। ২০২৪ সালের নির্বাচনের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে।
তাছাড়া জবানবন্দিতে উল্লেখ আছে, শেখ হাসিনা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর নিষ্ঠুর দমন চালিয়েছেন। কোনো রাজনৈতিক দল কার্যকরভাবে আন্দোলন করতে না পারে সেজন্য গ্রেপ্তার, আটক ও ‘আয়নাঘর’ নামে টর্চার সেল ব্যবহার করা হয়েছে। বদরুদ্দীন উমর বলেন, এই ধরনের দমন ও নিপীড়ন শেখ হাসিনার এক ধরনের বিকৃত আনন্দের অংশ ছিল।
জবানবন্দিতে স্পষ্ট করা হয়েছে, প্রকৃত জনগণের সঙ্গে শেখ হাসিনার সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন, আর প্রশাসন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে নিজের করায়ত্ত করেছেন তিনি।
এই জবানবন্দি বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থার স্বচ্ছতা, প্রশাসনের স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের নিরাপত্তা সম্পর্কে নতুন আলোচনার সূত্রপাত করবে।
জাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট
আবু সাঈদের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের জেরা চলছে