ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

প্রাথমিক শিক্ষকদের দাবি নিয়ে মন্ত্রণালয়ে বৈঠক, আন্দোলন স্থগিত

আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৩৬ পিএম

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ডাকা আগামীকাল থেকে অনশন কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবু নূর মো. শামসুজ্জামান এবং সহকারী শিক্ষক সমাজের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী রবিউল গণমাধ্যমকে এ কথা জানিয়েছেন। বৈঠকে সহকারী শিক্ষকদের সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে আলোচনার পর সহকারী শিক্ষক সংগঠনগুলো আপাতত তাদের অনশন কর্মসূচি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান জানান।

তিনি বলেন, ‘আমরা আশাবাদী যে আগামীকাল থেকে ঘোষিত আমরণ অনশন কর্মসূচি তারা প্রত্যাহার করবে।’ 

সহকারী শিক্ষক সমাজের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী রবিউল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আজ আমাদের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে শিক্ষক নেতৃবৃন্দের তিনটি মূল দাবি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি বাস্তবায়নে সরকারের আন্তরিকতা আমরা উপলব্ধি করেছি। সেজন্য আমরা আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া আমরণ কর্মসূচি স্থগিত করছি। আশা করছি সরকার দ্রুত এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবে।’

নূরে আলম সিদ্দিকী রবিউল বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, সরকারের সদিচ্ছা থাকলে এই দাবিগুলোর বাস্তবায়ন অচিরেই সম্ভব হবে। তবে প্রতিশ্রুতি পূরণ না হলে আমরা পুনরায় কর্মসূচি ঘোষণা করব।’

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আজকের বৈঠকটি অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, এবং অধিদপ্তরের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে নয়টি শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সম্মানিত শিক্ষক নেতৃবৃন্দ আলোচনায় অংশ নেন।’

তিনি জানান, বৈঠকে মূলত তিনটি দাবি নিয়ে আলোচনা হয়- সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেড থেকে ১১তম গ্রেডে উন্নীতকরণ, ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির সুযোগ সহজতর করা, প্রায় ৩২ হাজার ৫০০ সহকারী শিক্ষকের পদোন্নতি সম্পর্কিত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি।

মহাপরিচালক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যেহেতু প্রধান শিক্ষকদের গ্রেড এখন ১০ম গ্রেডে উন্নীত হয়েছে, তাই সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড প্রাপ্য। এই প্রস্তাব আমরা ইতিমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় ও পে কমিশনের কাছে পাঠিয়েছি। পে কমিশনের চেয়ারম্যান, অর্থসচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে তাদের বৈঠকের ব্যবস্থা করা হবে।’

তিনি আরও জানান, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রদানের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এবং পে কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে এটি বাস্তবায়নের সম্ভাবনা রয়েছে।

পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য বিদ্যমান বিধিমালা আরও সহজতর করা হয়েছে বলে মহাপরিচালক জানান। ‘যাতে যোগ্যতার ভিত্তিতে সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক এবং পরবর্তীতে উপজেলা শিক্ষা অফিসার পর্যন্ত পদোন্নতির সুযোগ তৈরি হয়,’ বলেন তিনি।

৩২ হাজার ৫০০ শিক্ষকের পদোন্নতি সংক্রান্ত মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আদালতে মামলাটির শুনানি হয়েছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই রায় পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। রায় পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পদোন্নতি কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।’

সূত্র: বাসস

LH/FJ
আরও পড়ুন