প্রতিটি মানুষের জীবনে পরিবারের গুরুত্ব অপরিসীম। পারিবারিক সম্পর্কের গাঁথুনি যার যতটা সুনিবিড় ও দৃঢ়, জীবন তার কাছে ততটা উপভোগ্য। বর্তমান যুগে পারিবারিক বন্ধন যে আগের চেয়ে কিছুটা হলেও কমেছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই। অথচ শক্ত পারিবারিক বন্ধনের জন্য খুব বেশি কিছু করার প্রয়োজন হয় না। দৈনন্দিন ছোট ছোট কাজ ও আচরণ, যেগুলো আমরা সাধারণত সেভাবে খেয়ালও করি না, সেগুলোর মাধ্যমেই পরিবারের সবার সঙ্গে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক রাখা যায়।
চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন ৮টি ছোট ছোট কাজ যা একটি সুখী পরিবারের মূল ভিত্তি তৈরিতে এবং পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা, বিশ্বাস ও সমর্থন বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে-

নতুন কিছুর পরিকল্পনা করা
পরিবারের সবাই মিলে একসঙ্গে নতুন কিছু করার জন্য সপ্তাহের একটি দিন নির্ধারণ করুন। সবাই মিলে কিছু একটা খেলা, একসঙ্গে সিনেমা দেখা, বাইরে ঘুরতে যাওয়াসহ যেকোনো কিছুই হতে পারে। যা-ই করুন না কেন, সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার চেষ্টা করুন। সবাই যাতে নিজ নিজ পছন্দের কোনো না কোনো কিছু করতে পারে, সেভাবে পরিকল্পনা করুন। একসঙ্গে কাটানো এসব আনন্দময় মুহূর্ত পারিবারিক বন্ধন শক্তিশালী করবে।
রাতের খাবারে গুরুত্ব দেওয়া
রাতের খাবারটা পরিবারের সবাই মিলে একসঙ্গে খান। এই সময়টাকে গুরুত্ব দিন। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিবারের সবাই একসঙ্গে রাতের খাবার খেলে সম্পর্ক মজবুত হয়।
খেলাধুলা
পারিবারিক সংযোগকে শক্তিশালী করতে এবং দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি তৈরি করার জন্য গেমিং একটি চমৎকার কার্যকলাপ। সপ্তাহে একদিন পরিবারের সবাই মিলে খেলার আয়োজন করলে পারিবারিক সন্তুষ্টি বাড়ে এবং বন্ধন গাঢ় হয়। হতে পারে সেটা বোর্ড গেম বা ভিডিও গেম। নিজেই বুঝতে পারবেন খেলাও ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে সহায়তা করে।
কাজ এবং পরিবারের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রাখুন
কখনো পরিবার বাদ দিয়ে শুধু কাজ নিয়ে ব্যস্ত হওয়া যাবে না। দুটোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে চলতে হবে। আমরা যেমন পরিবারের জন্য কাজ করি তেমনি কাজের শক্তি যোগানের জন্যেও আমাদের পরিবারের প্রয়োজন। কাজে গতি সঞ্চারের জন্যে পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের শারীরিক ও মানসিক শক্তি অর্জন করতে হবে। একটির সম্পর্কে ভাটা পড়লে অন্যটির গায়ে তার আঘাত লাগবেই।
নিজেদের জন্য একান্ত সময় বের করা
ব্যক্তিগত সময় এবং পারিবারিক সময়ের মধ্যে একটি স্পষ্ট পার্থক্য স্থাপন করুন। পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে ব্যক্তিগত কাজের জন্য নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করতে উৎসাহিত করুন। এটা বই পড়া, নিজের কোনো শখ পূরণ করা কিংবা একান্তে নিজে নিজে কিছুটা সময় কাটানোর মতো কিছু হতে পারে। আবার একসঙ্গে পারিবারিক সময়ের ওপরও গুরুত্ব দিন।
প্রশংসা করতে শিখুন
পরিবারের সবাই যাতে একে অপরের ভালো কাজ বা গুণের প্রশংসা করে, সেই রীতি চালু করুন। মানসিক সমর্থন বা সহায়তামূলক কাজের জন্য আমরা যদি পরিবারের সদস্যদের নিয়মিত প্রশংসা করি, তাহলে পারিবারিক সম্পর্কের গতিশীলতা বাড়বে এবং একে অপরের কৃতিত্বকে স্বীকৃতির গুরুত্বও অনুধাবন করা যাবে।
সবার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা
পরিবারের সকলের মনোযোগ দিয়ে একে অন্যের কথা শোনা উচিত। পরিবারে একে অন্যের সাথে সহজ, বাধাহীন একটা যোগাযোগ তৈরি করা উচিত। এতে পরিবারের প্রতি সকলের ভরসা বৃদ্ধি পাবে।
উৎসব পালন
পারিবারিক ঐতিহ্য রক্ষা করা এবং উৎসবগুলি উদ্যাপন করা পারিবারিক বন্ধনকে শক্তিশালী করার একটি উপায়। বিয়ে বার্ষিকী, জন্মদিন, সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় উৎসব উদ্যাপন বা অন্যান্য পারিবারিক ইভেন্ট তৈরি করে উদ্যাপন পারিবারিক ঐক্যের সৃষ্টি করে। এই অনুশীলনগুলি সবার মাঝে গভীর সংযোগ গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
