ঝলমলে, সুন্দর একমাথা চুল কে না চায় ! আর সেই সুন্দর চুল পাওয়ার আশায় কত কিই না করতে হয়! আসলে একটু নজর দিলে এমন চুল পাওয়া মোটেই কষ্টসাধ্য নয়! শুধু কয়েকটা ছোটখাটো, খুঁটিনাটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে! যেমন নিয়মিত মাথার ত্বক আর চুল পরিষ্কার রাখা, পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খাওয়া, সপ্তাহে অন্তত একদিন চুলে তেল মাখা আর অবশ্যই ঠিকমতো চুল ধুয়ে পরিষ্কার করা। সত্যি বলতে শুধু চুল ঠিকমতো ধোয়া আর শুকানোর উপরেও চুলের স্বাস্থ্য অনেকটা নির্ভর করে।
সুস্থ চুল মানে পরিষ্কার চুল। এর জন্য চাই নিয়মিত শ্যাম্পু আর কন্ডিশনিং। কাজেই শ্যাম্পু করার সময় ও তার আগে পরে যদি কিছু নিয়ম মেনে চলেন, তা হলে আপনার চুল প্রয়োজনীয় সেবা পেয়ে যাবে।। কীভাবে, জেনে নিন সেটাই।
শ্যাম্পু করার আগে স্টিম নিন
ঠিক যেভাবে মুখে স্টিম নিলে গভীর থেকে তেলময়লা বেরিয়ে আসে, একই কথা চুলের বেলাতেও খাটে। চুলে স্টিম নিলে চুলের গোড়ায় জমে থাকা সেবাম, খুসকি ও নোংরা আলগা হয়ে উঠে আসে। চুলে স্টিম নিতে হলে একটা তোয়ালে গরম পনিতে ডুবিয়ে পানি চিপে ফেলে মাথায় জড়িয়ে রাখুন। ২০ মিনিট এভাবে রেখে তারপর শ্যাম্পু করে ফেলুন।

চুলে মাসাজ করে নিন
শ্যাম্পু করতে শুরু করার আগে চুলের গোড়ায় গোড়ায় আঙুল চালিয়ে কয়েক মিনিট মাসাজ করুন। এতে মাথার ত্বকের ময়লাগুলো আলগা হয়ে উঠে আসবে, দুর্বল চুলও উঠে যাবে।
ঠান্ডা পানি দিয়ে শ্যাম্পু করুন
চুলের পক্ষে গরম পানি ভীষণ ক্ষতিকর। তাই সবসময় ঠান্ডা বা কুসুমগরম পানিই মাথায় ঢালবেন। গরম পানির কারণে চুলের স্বাভাবিক তেল নষ্ট হয়। এতে চুল রুক্ষ হয়ে যায়। অন্যদিকে ঠান্ডা পানি চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে, ফলে শ্যাম্পু করার পর চুল অনেক বেশি ঝলমলে দেখায়।
শ্যাম্পুর গুণ ও মানের দিকে লক্ষ্য রাখুন
চুলের জন্য প্রাকৃতিক বা হার্বাল শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন। অন্য শ্যাম্পুর বেলায় ব্যবহারের আগে দেখে নেবেন তাতে যেন প্যারাবেন বা সালফেট না থাকে। এই দুটি রাসায়নিকই স্ক্যাল্পে প্রদাহ বা অ্যালার্জির কারণ হয়ে উঠতে পারে। তা ছাড়া ক্যান্সারের কারণ হিসেবেও এই দুটি রাসায়নিককে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাই প্যারাবেন বা সালফেটমুক্ত অর্গানিক শ্যাম্পুই ব্যবহার করুন।
মাথার ত্বকে শ্যাম্পু লাগান
আমরা অনেকেই প্রথমে চুলে শ্যাম্পু লাগাই, তারপর গোড়ায় বা স্ক্যাল্পে মাখি। চুল শুকনো নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ার বড়ো কারণ এটি। চুলে শ্যাম্পু লাগানোর সঙ্গে সঙ্গেই চুলের স্বাভাবিক তেলের আস্তরণটি নষ্ট হয়ে চুল রুক্ষ বিবর্ণ হয়ে পড়ে। তাই শ্যাম্পু শুধুমাত্র স্ক্যাল্পেই লাগাবেন, ভালো করে মাসাজ করে ফেনা করে নেবেন। সেই ফেনাই বাকি চুলে লেগে চুল পরিষ্কার রাখবে।

শ্যাম্পুর সময় হালকা মাসাজ করুন
শ্যাম্পুতে ফেনা তোলার জন্য আঙুলের ডগা দিয়ে চুলের গোড়ায়, মাথার তালুতে কোমলভাবে মাসাজ করুন। স্ক্যাল্পে জমে যাওয়া ময়লা সব উঠে আসবে। তা ছাড়া মাসাজের ফলে চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন হয়ে চুল ঘন দেখাবে।
প্রতিদিন শ্যাম্পু করবেন না
বেশিরভাগ শ্যাম্পুতেই কিছু না কিছু কেমিক্যাল থাকে যা রোজ ব্যবহার করলে চুল রুক্ষ আর কর্কশ হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবারের বেশি শ্যাম্পু করবেন না।
অনেকক্ষণ ধরে শ্যাম্পু করবেন না
ভেজা অবস্থায় চুল খুব স্পর্শকাতর অবস্থায় থাকে, সামান্য এ দিক ও দিক হলেই তা ভেঙে ঝরে যেতে পারে। তাই বেশিক্ষণ ধরে শ্যাম্পু করবেন না, তাতে চুল খুব দুর্বল হয়ে পড়বে। চুল ভেজানোর পর ১৫ মিনিটের মধ্যে শ্যাম্পু আর কন্ডিশনিং, দুটো কাজই সেরে ফেলুন। চুল ভালো থাকবে।
