ইমিগ্রেশনের সময় ৭টি কথা বললেই মহাবিপদ!

আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম

বিদেশ ভ্রমণ অনেকের কাছে স্বপ্নের মতো হলেও বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পার হওয়ার মুহূর্তটি প্রায়শই দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিচ্ছেন, ইমিগ্রেশন ডেস্কে প্রয়োজনীয় নথি ঠিকঠাক থাকলেও সামান্য ভুল বা অসচেতন কোনো উত্তর যাত্রীর জন্য বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে এমনকি দেশে ফেরতও পাঠানো হতে পারে।

ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত থাকেন এবং তারা সহজেই যাত্রীর কথায় অসঙ্গতি, দ্বিধা বা সন্দেহজনক কিছু টের পান। তাই অপ্রয়োজনীয় বা অস্পষ্ট উত্তর না দিয়ে সব প্রশ্নের জবাব সংক্ষিপ্ত, স্পষ্ট ও ভদ্রভাবে দেওয়া জরুরি।

এখানে ইমিগ্রেশনের সময় ভুলেও না বলার মতো ৭টি কথা এবং তার প্রভাব তুলে ধরা হলো-

১. ‘আমি জানি না কোথায় থাকব’

পরিকল্পনার অভাব ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের কাছে বড় প্রশ্ন তুলে ধরে। থাকার জায়গার স্পষ্ট প্রমাণ (হোটেল বুকিং, এয়ারবিএনবি ঠিকানা বা আত্মীয়ের বাসার তথ্য) লিখিতভাবে সঙ্গে রাখুন। ক্যানসেলযোগ্য বুকিং হলেও সেটি প্রমাণ হিসেবে দেখানো যায়।

২. ‘আমি এখানে কাজ করতে এসেছি’

ওয়ার্ক ভিসা ছাড়া এমন কথা বলা বিপজ্জনক ভুল হতে পারে। যদি আপনি ব্যবসায়িক সফরে গিয়ে থাকেন, তবে স্পষ্টভাবে বলুন যে আপনি মিটিং, সেমিনার বা প্রশিক্ষণে অংশ নিতে এসেছেন। নিয়ম ভঙ্গ করলে ভিসা বাতিল পর্যন্ত হতে পারে।

৩. ‘আমি শুধু অনলাইনে পরিচিত এক বন্ধুকে দেখতে এসেছি’

এই উত্তরটি শুনতে সাধারণ মনে হলেও ইমিগ্রেশন অফিসাররা এমন সম্পর্ক নিয়ে খুবই সন্দেহ করেন, যা গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই আপনি যার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন, তার সম্পূর্ণ ঠিকানা প্রস্তুত রাখুন এবং অতিরিক্ত তথ্য ভাগ না করে কেবল প্রয়োজনীয় উত্তরটি দিন।

৪. ‘আমার ফিরতি টিকেট নেই’

ফিরতি টিকিট না থাকলে কর্মকর্তারা ধরে নিতে পারেন যে আপনি দেশটিতে অবৈধভাবে থেকে যাবেন। তাই অন্তত একটি রিফান্ডযোগ্য ফিরতি টিকিট সঙ্গে রাখুন। এটি আপনার ভ্রমণ পরিকল্পনার প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।

৫. ‘আমি সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি বুঝে নেব’

ভ্রমণ পরিকল্পনা সম্পর্কে অস্পষ্ট মন্তব্য আপনার অপ্রস্তুতি তুলে ধরে। আপনি যদি নির্দিষ্ট গন্তব্যও না জানেন, তবুও অন্তত একটি সাধারণ পরিকল্পনা তাদের সামনে তুলে ধরুন (যেমন: কোথায় যাবেন, কী কী স্থানে ভ্রমণ করবেন বা কোন শহরগুলোতে যাবেন)।

৬. মাদক, বোমা বা অপরাধ নিয়ে মজা

এসব শব্দ উচ্চারণ করা ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের কাছে গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে। এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে কখনোই মজা করবেন না।

৭. ‘আমার কাছে যথেষ্ট অর্থ নেই’

আপনার কাছে পর্যাপ্ত টাকা নেই স্বীকার করলে বা এই প্রশ্নে ভুল করলে সন্দেহ তৈরি হবে। সব সময় ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ক্রেডিট কার্ড, এমনকি প্রয়োজনে নগদ অর্থের মতো প্রমাণাদি বহন করুন, যা নিশ্চিত করে যে আপনি আর্থিকভাবে সক্ষম।

ভুল কথা বললে কী হতে পারে

ইমিগ্রেশনে ভুল উত্তর দিলে সরাসরি দেশে ফেরত পাঠানো নাও হতে পারে। তবে আপনাকে সেকেন্ডারি ইন্সপেকশনে পাঠানো, ব্যাগ তল্লাশি, দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ বা ভিসা বাতিলের মতো সমস্যায় পড়তে হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দেন, ইমিগ্রেশনে আপনার কথার স্পষ্টতা ও সঙ্গতিই হলো সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা।

NB/FJ