গর্ভাবস্থার প্রতিটি ধাপে একজন নারীর শরীর ও মনের মধ্যে পরিবর্তন আসে। এই সময় মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং অস্থিরতা একটি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তবে গবেষণা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রেনাটাল ইয়োগা—একটি প্রাচীন মাইন্ড-বডি থেরাপি— এই মানসিক চাপ কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
কখন শুরু করবেন
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিক (১২–১৩ সপ্তাহ) শেষ হওয়ার পর থেকেই নিরাপদভাবে যোগব্যায়াম শুরু করা যায়। তবে যদি আপনি আগেই যোগব্যায়াম চর্চা করে থাকেন, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চালিয়ে যাওয়া যেতে পারে। নতুনদের জন্য সনদপ্রাপ্ত প্রেনাটাল ইয়োগা প্রশিক্ষকের অধীনে অনুশীলন করাই উত্তম।
কখন যোগব্যায়াম এড়িয়ে চলবেন

গর্ভাবস্থায় কিছু জটিল শারীরিক অবস্থায় যোগব্যায়াম করা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। যেমন—
- যোনিপথে রক্তপাত বা প্লাসেন্টা প্রিভিয়ার ইতিহাস
- পূর্বে গর্ভপাত বা প্রি-টার্ম লেবার
- তীব্র রক্তাল্পতা বা হৃদরোগ
- যখন চিকিৎসক পূর্ণ বিশ্রামের পরামর্শ দেন
আদর্শ যোগব্যায়ামের রুটিন
- সপ্তাহে ৩ দিন, প্রতিদিন ৩০–৪৫ মিনিট
- হালকা শরীরচর্চা, নিয়ন্ত্রিত শ্বাসপ্রশ্বাস ও ৫–১০ মিনিট ধ্যান
- গভীর ব্যাকবেন্ড বা ঝুঁকিপূর্ণ আসন পরিহার
- বোলস্টার বা বালিশের সাহায্যে সাপোর্ট ব্যবহার
চিকিৎসকের অভিমত
Cloudnine Hospital-এর গাইনোকোলজিস্ট ডা. চেতনা জৈন বলেন, ‘প্রেনাটাল ইয়োগা শুধুই ব্যায়াম নয়—এটি এক ধরণের মানসিক প্রস্তুতি। এটি মা ও অনাগত শিশুর মধ্যে এক আত্মিক বন্ধন গড়ে তোলে। একজন শান্ত মা মানেই একটি সুস্থ, স্বাচ্ছন্দ্যময় গর্ভাবস্থা ও নিরাপদ প্রসব।’
যদি আপনি গর্ভাবস্থায় উদ্বিগ্ন কিংবা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বোধ করেন— জানুন, আপনি একা নন। প্রেনাটাল যোগব্যায়াম হতে পারে আপনার মানসিক শান্তির পথ। কারণ, যখন মা শান্তিতে নিঃশ্বাস নেয়, তখন শিশুও প্রশান্তি পায়।
গর্ভাবস্থা বা প্রসবজনিত জটিলতায় প্রতি ২ মিনিটে এক নারীর মৃত্যু : জাতিসংঘ