হাসি মানুষকে আনন্দ দেয়, আর সেই হাসিকে সুন্দর করে দাঁত। দাঁতের সাহায্যেই আমরা প্রতিদিন খাবার খাই, তাই দাঁতের সঠিক যত্ন খুবই জরুরি। সুস্থ ও মজবুত দাঁতের জন্য স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন। চলুন এখন জেনে নেওয়া যাক দাঁতের সঠিক যত্নে ৫টি টিপস-
নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করুন

প্রতিদিন অন্তত ২ বার, প্রতিবার ২ মিনিট করে দাঁত ব্রাশ করুন। প্রথমে শুধু পানি দিয়ে শুকনো ব্রাশে দাঁত পরিষ্কার করুন, বিশেষ করে মাড়ির নিচে থাকা প্লাক (biofilm) দূর করার দিকে মনোযোগ দিন। এরপর টুথপেস্ট ব্যবহার করুন। এতে ফ্লোরাইড দাঁত মজবুত করবে এবং দাগ দূর করে দাঁত করবে ঝকঝকে সাদা। ব্রাশ করার সময় দাঁতের সব দিক ও জিহ্বা পরিষ্কার করতে ভুলবেন না।
দিনের বেলায় দাঁত ব্রাশ করার কারণে প্লাক উপজাত এবং বিষক্রিয়া জনিত মাথাব্যথার ক্ষতি হ্রাস করা সম্ভব। তাই যদি পারেন দুপুরেও খাওয়ার পর একবার দাঁত ব্রাশ করে নিন। আপনি এ বিষয়ে পরিষ্কার জানার জন্য আপনার ডেন্টিস্টকে অনুরোধ করতে পারেন।
রাতে ঘুমানোর সময় আমাদের মুখ দিনের মতো লালা সুরক্ষা করে না। তাই রাতে বিছানায় যাওয়ার আগে এক বার দাঁত ব্রাশ করা ভালো। এতে আপনি সকাল পর্যন্ত নিশ্চিন্ত ও সুরক্ষিত থাকতে পারবেন।
দৈনিক দাঁতে Floss এবং জিহবার স্ক্র্যাপার ব্যবহার করুন

যে কোন খাবার খাওয়ার পর তা আপনার দাঁতের মধ্যে আঁটকে যায় (যেমনঃ মাংস, ভূট্টা, caramel, চিনাবাদাম, মাখন, ইত্যাদি)। তাই দৈনিক আপনার দাঁতে Floss ব্যবহার করুন। Floss ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার দাঁতের অন্য পাশকেও পরিষ্কার করতে পারবেন যেখানে আপনার টুথব্রাশ পৌঁছোতে পারে না।
স্বাস্থ্যবিধির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে জিহবার স্ক্র্যাপার। নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ এবং জিহবার প্লাক দূর করার জন্য এটি ব্যবহার করুন। আপনার টুথব্রাশ ব্যবহার করেও জিহবা পরিষ্কার করতে পারেন।
মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করুন

আপনার ডেন্টিস্টের সাহায্যে একটি ভালো ফ্লোরাইড মাউথওয়াশ খুঁজে বের করুন। ফ্লোরাইড মাউথ ওয়াশ দাঁত জোরদার করতে সাহায্য করে। ৬ থেকে ১২ বছর বয়সের মধ্যে শিশুদের মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করা শেখানো ভালো। তবে ব্যবহারের আগে বোতলের সাথে থাকা নির্দেশনা দেখে নিবেন।
বিজ্ঞতার সঙ্গে আপনার খাবার বেঁছে নিন

বারবার snacking এড়িয়ে চলুন, এতে প্লাক ও ক্যাভিটি বাড়ে। চিনিযুক্ত ও স্টিকি খাবার দাঁতের ক্ষতি করে, তাই কম খান। মিষ্টি খাবারের পর পানি পান করুন। ফলের রস সীমিত পরিমাণে পান করুন, শুধু খাবারের সময়। শক্ত হাড় বা বীজজাতীয় খাবার কম চিবান, এতে দাঁতে ফাঁটল হতে পারে। ডেন্টিস্ট এর কাছে যান
অন্তত প্রতি ৬ মাসে একবার ডেন্টিস্টের কাছে যান। বছরে অন্তত একবার পেশাদার ডেন্টাল হাইজেনিস্ট দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করুন। ক্যাভিটি বা মাড়ির রোগের লক্ষণ খেয়াল করুন। সঠিকভাবে ব্রাশ ও ফ্লস ব্যবহারের পরামর্শ নিন ডেন্টিস্ট-হাইজেনিস্টের কাছ থেকে।
দাঁতের সঠিক যত্নে করণীয়
* আপনার টুথ ব্রাশ প্রতি তিন মাস পর পর বদলান।
* প্রতিদিন দুধ পান করার চেষ্টা করুন, এটি আপনার ক্যালসিয়াম বাড়ায়। ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁত মজবুত করতে সাহায্য করে।
* টুথব্রাশ এমন হতে হবে যেন সহজেই তা gumline এর দিকে বাঁকানো যায়। একটি ছোট বৃত্তাকার গতিতে আপনার দাঁতের ভেতরে, বাইরে, উপরে এবং GUM লাইনের নিচে ব্রাশ করুন। কোমল পানীয় পান করার অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং চিনিযুক্ত খাবার আপনার দাঁত থেকে দূরে রাখুন।
* খুব শক্ত ব্রাশ আপনার মাড়িতে আঘাত করে রক্ত ঝড়াতে পারে আর খুব নরম ব্রাশ প্লাক দূর করতে পারে না। তাই মাঝারি ধরনের ব্রাশ ব্যবহার করুন।
* যখন আপনার সামনের দাঁতের ভেতর পাশ ব্রাশ করবেন, প্রথমে টুথব্রাশকে আপনার দাঁতের ডান পাশের উপর রাখুন। এরপর ব্রাশ নিচে এবং উপরের দিকে সরিয়ে প্রতিটি দাঁত ব্রাশ করবেন। এই পদ্ধতি প্রতিটি দাঁতের জন্য বেশ কয়েকবার করে করুন।
* দাঁত ব্রাশ করার পরে মুখে মাউথওয়াশ ব্যবহার করুন।
* আপনার জিহবা ব্রাশ করতে ভুলবেন না, সেই সাথে আপনার মুখের উপরের তালু।
মুখে প্রতিদিনই লক্ষ লক্ষ ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয়, যা দাঁতের চারপাশে জমে প্লাক তৈরি করে দাঁত ক্ষয় করে। সকালে ঘুম থেকে উঠে জিহ্বা দাঁতে চালালেই এ অনুভূতি পাওয়া যায়। দাঁতের সঠিক যত্নে এই কাজগুলো করুন, আশা করি সুস্থ থাকবে আপনার দাঁত।
সারকোপেনিয়া বা পেশির ক্ষয় কেন হয়, রোধ করতে কী করবেন
‘জিনগত কারণেই অকাল বার্ধক্য’
হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে যা করণীয়