আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সদস্য লাঞ্ছিত-হামলার ঘটনা বাড়ছে। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মূল ভূমিকায় থাকা পুলিশ আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে ৩৬৮টি।
পুলিশের তথ্যমতে, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে বিভিন্ন অপরাধে সারাদেশে মামলা হয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ৭৮৩টি। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মূল ভূমিকায় থাকা পুলিশ আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে ৩৬৮টি।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরাধ মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পুরোপুরি কঠোর ও আরও সক্রিয়তা জরুরি। এদিকে উদ্ধার না হওয়া অস্ত্রগুলো বড় ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের সাত মাসে সারা দেশে খুনের মামলা হয়েছে ২ হাজার ২৯৩টি। নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা হয়েছে ১৩ হাজার ১৩০টি, অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ৬২৫টি, ছিনতাই-চুরির ঘটনা ঘটেছে ৫ হাজার ৩৮৭টি। এছাড়া সারাদেশে ডাকাতি, দস্যুতা, দাঙ্গা, সিঁধেল চুরিসহ অন্যান্য ঘটনায় অসংখ্য মামলা হয়েছে। ২০২৪ সালে সারাদেশে বিভিন্ন অপরাধে মামলা হয়েছে ১ লাখ ৭২ হাজার ৫টি। খুনের মামলা ৩ হাজার ৪৩২টি, নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা ১৭ হাজার ৫৭১টি, অপহরণ ৬৪২টি, পুলিশ হামলা ও লাঞ্ছিতের মামলা ৬৪৩টি, চুরি ৮ হাজার ৬৫৫টি।
মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) তথ্য মতে, দেশে গণপিটুনিতে হত্যার সংখ্যা বেড়েছে।
আগস্ট মাসে অন্তত ৩৮টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। জুলাই মাসে এর সংখ্যা ছিল ৫১টি। গণপিটুনিতে আগস্টে ২৩ জন নিহত ও ৪৩ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। জুলাই মাসে এমন ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন ১৬ জন। গণপিটুনিতে নিহতের মধ্যে ১০ জনকে চুরির অভিযোগে, ৪ জনকে সন্দেহজনক চুরির অভিযোগে, ৩ জনকে ডাকাতির অভিযোগে, ১ নারীসহ ২ জনকে পূর্বশত্রুতার জেরে, ১ জন মাদক মামলার অভিযুক্ত, ২ জনকে ছিনতাইয়ের অভিযোগে ও ১ জনকে চাঁদাবাজির অভিযোগে হত্যা করা হয়।
এমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট মাসে ৩৪৯টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এ মাসে ধর্ষণের ঘটনা ৪৭টি, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ১৯টি, ধর্ষণ ও হত্যা ৪টি। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৯ জন প্রতিবন্ধী কিশোর ও নারী। ধর্ষণের শিকার ৪৭ জনের মধ্যে ১১ জন শিশু, ১৭ জন কিশোরী রয়েছে। অন্যদিকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৬ জন কিশোরী ও ৯ জন নারী এবং ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়েছেন ২ জন শিশু ও ১ জন কিশোরী। ধর্ষণের চেষ্টা ২৪টি, যৌন হয়রানি ২১টি, শারীরিক নির্যাতনের ৯৪টি ঘটনা ঘটেছে। আগস্ট মাসে রাজনৈতিক সহিংসতার ৪৯টি ঘটনায় শিকার হয়েছেন ৫৪৯ জন। তাদের মধ্যে দুজন নিহত এবং ৫৪৭ জন আহত হয়েছেন।
সহিংসতার ৪৯টি ঘটনার মধ্যে ১১টি ঘটনায় রাজনৈতিক বিরোধ এবং সহিংসতাকে কেন্দ্র করে পার্টি অফিস, বসতবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা ও অগ্নিকাণ্ড এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এমএসএফ আরও জানায়, সহিংসতার ৩৮টি ঘটনার মধ্যে বিএনপি’র অন্তর্দ্বন্দ্বে ২৩টি, বিএনপি-আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে ৫টি, এনসিপি-আওয়ামী লীগ দ্বন্দ্বে ২টি, বিএনপি-এনসিপি দ্বন্দ্বে ১টি, বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষে ২টি, আওয়ামী লীগ-জামায়াত সংঘর্ষে ১টি, আওয়ামী লীগ-গণপরিষদ ১টি, জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের সংঘর্ষের ২টি, গণঅধিকার পরিষদ-পুলিশের ১টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে ৫৯ কর্মকর্তার পদায়ন
‘নির্বাচনি নিরাপত্তায় দেড় লাখ পুলিশ পাবে বিশেষ প্রশিক্ষণ’
ত্রয়োদশ নির্বাচন: কাল শুরু হচ্ছে পুলিশ সদস্যদের বিশেষ প্রশিক্ষণ