ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

কোরআনের ভাষায় ব্যর্থ যারা

আপডেট : ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০৩:২৩ এএম

পবিত্র কোরআনে ব্যর্থতা বুঝানোর জন্য ‘খা-বা’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। খায়বাহ বা ব্যর্থতা হলো কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হওয়া, যা প্রত্যাশা করেছিল তা না পাওয়া, যা আশা করেছিল তাতে সফল না হওয়া। 

খায়বাহ বা ব্যর্থতার কথা কোরআনের চার স্থানে উল্লেখ করা হয়েছে, যার সবগুলোই জুলুমের সঙ্গে সম্পর্কিত। হয় ব্যাপক অর্থে জুলুম (শিরক), অথবা বান্দাদের প্রতি জুলুম, অথবা নিজের প্রতি জুলুম।

১) জালিমুন বা জালেমরা 

 

কোরআনুল কারিমের সুরা ত্বাহায় বলা হয়েছে—‘আর যে জুলুম বহন করেছে সে ব্যর্থ হয়েছে।’ (সুরা ত্বাহা, আয়াত : ১১১)

ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, ‘যে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করেছে সে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আর জুলুম হলো শিরক।’ এই ব্যাপক অর্থে জুলুম বলতে শিরক বোঝানো হয়েছে। শিরক দুই প্রকার : প্রকাশ্য শিরক, গোপন শিরক (যা পিপড়ার চলার চেয়েও সূক্ষ্ম), এবং ছোট শিরক (রিয়া বা লোক দেখানো)

২) জাবাবেরাহ ও ‘আনীদ তথা অত্যাচারী একগুঁয়েরা 

পবিত্র কোরআন অত্যাচারী একগুঁয়েদেরওে ব্যর্থ বলে চিহ্নিত করেছে। সুরা ইবরাহিমের ১৫ নং আয়াতে বলা হয়েছে—‘আর তারা ফায়সালা চাইল, এবং প্রতিটি অত্যাচারী একগুঁয়ে ব্যর্থ হলো।’

যে মানুষকে তার ইচ্ছার উপর জোর করে চালিত করে সেই অত্যাচারী। আর যে সত্যের বিরোধিতা করে এবং তা থেকে দূরে থাকে সে একগুঁয়ে। হাদিসে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই জাহান্নামে একটি উপত্যকা আছে, আর সেই উপত্যকায় একটি কূপ আছে যার নাম ‘হাবহাব'। আল্লাহর ওপর হক যে তিনি প্রতিটি অত্যাচারী একগুঁয়েকে সেখানে বাস করাবেন।’ (তাবারানি, আল-মুজামুল কাবির, হাদিস : ১২২১৭)

৩) মিথ্যারোপকারীরা 

পবিত্র কোরআন মিথ্যারোপকারীদেরও ব্যর্থ বলে চিহ্নিত করেছে। সুরা ত্বাহার ৬১ নং আয়াতে বলা হয়েছে—‘আর যে মিথ্যারোপ করেছে সে ব্যর্থ হয়েছে।’ সুরা আনকাবুতের ৬৮ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে—‘আর তার চেয়ে বড় জালেম কে, যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে অথবা তার কাছে সত্য আসার পর তা অস্বীকার করে?’

ইফতিরা হচ্ছে—‘অন্যের ব্যাপারে এমন মিথ্যা বলা যা সে পছন্দ করে না'। আল-কাফাওয়ির মতে, ইফতিরা হচ্ছে মিথ্যার চরম রূপ। ইমাম সুয়ূতির মতে, ইফতিরা হচ্ছে এমন বিষয়ের উদ্ভাবন যার কোনো ভিত্তি নেই। 

৪) নিজ আত্মাকে কলুষিতকারীরা 

পবিত্র কোরআন আত্মাকে কলুষিতকারী ব্যক্তিকেও ‘খা-বা’ বা ব্যর্থ হয়েছে বলে চিহ্নিত করেছে। সুরা শামস এর ১০ নং আয়াতে বলা হয়েছে—‘আর যে তাকে (আত্মাকে) কলুষিত করেছে সে ব্যর্থ হয়েছে।’

হাসান বসরি (রহ.)-এ র মতে, এই আয়াতে সেই লোক উদ্দেশ্য—‘যে নিজেকে ধ্বংস করেছে, পথভ্রষ্ট করেছে এবং পাপের দিকে পরিচালিত করেছে'। আর ইবনুল আরাবির এই আয়াতে সেই লোক উদ্দেশ্য—‘যে নিজেকে নেককারদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেছে অথচ সে তাদের কর্মধারার মধ্যে নেই।’

HN
আরও পড়ুন