ঢাকা
সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

অ্যামাজন-গুগলে মাল্টিক্লাউড সেবা চালু

আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:২২ পিএম

ইন্টারনেট সেবায় সামান্য বিঘ্নও এখন বড় ধরনের বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। এমন বাস্তবতার মধ্যেই দ্রুততর ও নির্ভরযোগ্য সংযোগ নিশ্চিত করতে নতুন মাল্টিক্লাউড নেটওয়ার্কিং সেবা চালু করেছে প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যামাজন ও গুগল। 

রোববার এক বিবৃতিতে দুই প্রতিষ্ঠান জানায়, গ্রাহকের বাড়তে থাকা চাহিদাই তাদের এই উদ্যোগ নিতে উৎসাহিত করেছে।

যৌথ উদ্যোগটির ফলে ব্যবসায়িক গ্রাহকেরা এখন মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস (এডব্লিউএস) এবং গুগল ক্লাউড প্ল্যাটফর্মের মধ্যে ব্যক্তিগত, উচ্চগতির সংযোগ স্থাপন করতে পারবেন। এত দিন এ ধরনের সংযোগ স্থাপন করতে সপ্তাহ লেগে যেত। ক্লাউডভিত্তিক সেবা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা–নির্ভর প্রযুক্তির বিস্তার বাড়ায় দ্রুতগতির নেটওয়ার্ক এখন অত্যাবশ্যক হয়ে উঠেছে।

গত ২০ অক্টোবর এডব্লিউএস–এ বড় ধরনের বিভ্রাট দেখা দেওয়ার এক মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে নতুন সেবার ঘোষণা এলো। ওই বিভ্রাটে বিশ্বের হাজারো ওয়েবসাইট অচল হয়ে পড়ে। জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম স্ন্যাপচ্যাট ও রেডিটসহ বহু অ্যাপ কয়েক ঘণ্টা বন্ধ ছিল। 

বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান পরামিত্রিক্স জানিয়েছে, এই বিভ্রাটে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর ক্ষতি দাঁড়াতে পারে ৫০ কোটি থেকে ৬৫ কোটি ডলারের মতো।

এই অভিজ্ঞতার পর সংযোগের নির্ভরযোগ্যতা আরও বাড়াতে দুটি প্রতিষ্ঠান নতুন প্রযুক্তিতে হাত মিলিয়েছে। অ্যামাজন বলছে, তাদের ‘ইন্টারকানেক্ট-মাল্টিক্লাউড’ প্রযুক্তিকে গুগলের ‘ক্রস–ক্লাউড ইন্টারকানেক্ট’ সুবিধার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এতে দুই ক্লাউড প্ল্যাটফর্মের নেটওয়ার্ক আরও সমন্বিতভাবে কাজ করবে এবং গ্রাহকেরা নির্বিঘ্নে ডেটা ও অ্যাপ্লিকেশন স্থানান্তর করতে পারবেন।

এডব্লিউএস-এর নেটওয়ার্ক সেবার সহ-সভাপতি রবার্ট কেনেডি বলেন, ‘এডব্লিউএস এবং গুগল ক্লাউডের এই সহযোগিতা মাল্টিক্লাউড সংযোগে বড় ধরনের পরিবর্তন এনে দেবে।’ 

গুগল ক্লাউডের ক্লাউড নেটওয়ার্কিং বিভাগের সহ-সভাপতি রব এন্সের ভাষায়, ‘গ্রাহকেরা দুই ক্লাউড প্ল্যাটফর্মের মধ্যে এখন আরও সহজে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারবেন। এ ধরনের সংযোগ আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় দ্রুত ও নিরাপদ হবে।’

গুগল ক্লাউডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গ্রাহক সম্পর্ক ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যার নির্মাতা সেলসফোর্স ইতিমধ্যে এই সেবা ব্যবহার শুরু করেছে। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ক্লাউড সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস শীর্ষে রয়েছে। তার পরেই রয়েছে মাইক্রোসফটের অ্যাজিউর এবং গুগল ক্লাউড।

ইন্টারনেট ব্যবহার, ভিডিও স্ট্রিমিং, অনলাইন ব্যবসা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর সেবার দ্রুত বিকাশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো নেটওয়ার্ক অবকাঠামো তৈরিতেই বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। শুধু তৃতীয় প্রান্তিকেই অ্যামাজনের ক্লাউড ব্যবসার আয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ বিলিয়ন ডলার। যা গুগল ক্লাউডের আয়ের দ্বিগুণেরও বেশি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আধুনিক ব্যবসায় মাল্টিক্লাউড ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে। একাধিক ক্লাউডে কাজ করলে ঝুঁকি কমে, আর ডেটা ব্যবস্থাপনা হয় আরও নমনীয়। ফলে অ্যামাজন–গুগলের এই নতুন উদ্যোগ ভবিষ্যতের ডিজিটাল অবকাঠামোকে আরও শক্তিশালী করবে বলেই তাদের ধারণা।

SN
আরও পড়ুন