হ্যাপি নিউ ইয়ার যেমন হচ্ছে দেশে দেশে

ইংরেজি নতুন বছরে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। বিশ্বজুড়ে সমতা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।

আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২৯ পিএম

আজ ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ সালের শেষ দিন। ইতিমধ্যেই নিউ ইয়ার বা ইংরেজি নতুন বছর উদযাপন শুরু হয়ে গিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। যতই সময় এগোচ্ছে, ততই যেন উদযাপনের মাত্রা আরও বাড়ছে।

নতুন বছর, ২০২৫ এর সূচনা হবে দারুণ জমকালো ভঙ্গিতে। বিভিন্ন দেশে নববর্ষকে ঘিরে নানা উত্তেজনার পরশ ছড়িয়ে রয়েছে। জানেন কী সবচেয়ে প্রথম কোন দেশে পালিত হয় নিউ ইয়ার? আরও জেনে নিন সারা বিশ্বে কিভাবে পালিত হয় ইংরেজি বর্ষবরণ।

কোন দেশ প্রথম উদযাপন করবে?

ওশেনিয়া বিশ্বের এমন একটি জায়গা যেখানে বিশ্বের অন্যান্য স্থানের আগে নতুন বছর উদযাপন করা হবে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র টোঙ্গা, কিরিবাতি এবং সামোয়া প্রথম নতুন বছরকে বরণ করবে। কারণ, এখানে ৩১ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক টাইম মান জিএমটি অনুযায়ী সকাল সাড়ে ১০টায় ১ জানুয়ারি শুরু হয়।

কোন দেশ শেষে উদযাপন করবে?

যুক্তরাষ্ট্রের কাছাকাছি বাকার এবং হাওল্যান্ড দ্বীপের মতো জায়গাগুলো নতুন বছরকে সবার শেষে স্বাগত জানাবে। তারা ১ জানুয়ারি জিএমটি দুপুর ১২টায় নতুন বছর উদযাপন শুরু করবে।

লন্ডন সময় (জিএমটি) অনুযায়ী যখন বিভিন্ন দেশ নতুন বছরকে স্বাগত জানাবে-

ডিসেম্বর ৩১
সকাল ১০টা: সামোয়া এবং ক্রিসমাস আইল্যান্ড/কিরিবাতি

সকাল ১০টা ১৫ মিনিট: নিউজিল্যান্ড

দুপুর ১২টা: ফিজি ও পূর্ব রাশিয়া

দুপুর ১টা: পূর্ব অস্ট্রেলিয়া (মেলবোর্ন ও সিডনি)

দুপুর ২টা: মধ্য অস্ট্রেলিয়া (ব্রিসবেন, ডারউইন ও অ্যাডিলেড)

বিকেল ৩টা: জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও উত্তর কোরিয়া

বিকেল ৩.৩৫ মিনিট: পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া (পার্থ এবং ইউক্লা)

বিকেল ৪টা: চীন, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর

বিকেল ৫টা: থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও ইন্দোনেশিয়া

বিকেল ৫টা ৩০ মিনিট: মিয়ানমার ও কোকোস দ্বীপপুঞ্জ

সন্ধ্যা ৬টা: বাংলাদেশ

সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিট: নেপাল

সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট: ভারত ও শ্রীলঙ্কা

সন্ধ্যা ৭টা: পাকিস্তান

রাত ৮টা: আজারবাইজান

রাত ৮টা ৩০ মিনিট: ইরান

রাত ৯টা: তুরস্ক, ইরাক, কেনিয়া ও পশ্চিম রাশিয়া

রাত ১০টা: গ্রিস, রোমানিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, হাঙ্গেরি এবং পূর্ব ইউরোপীয় শহর

রাত ১১টা: জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, আলজেরিয়া, বেলজিয়াম, স্পেন

মধ্যরাত: যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, ঘানা, আইসল্যান্ড, পর্তুগাল

জানুয়ারি ১
রাত ১টা: কেপ ভার্দে এবং স্প্যানিশ দ্বীপপুঞ্জ

রাত ২টা: পূর্ব ব্রাজিল, দক্ষিণ জর্জিয়া এবং স্যান্ডউইচ দ্বীপপুঞ্জ

রাত ৩টা: আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, চিলি, প্যারাগুয়ের অবশিষ্ট অঞ্চল

রাত ৩টা ৩০ মিনিট: নিউফাউন্ডল্যান্ড এবং ল্যাব্রাডর/কানাডা

ভোর ৪টা: পূর্ব কানাডা, বলিভিয়া, পুয়ের্তো রিকো

সকাল ৫টা: যুক্তরাষ্ট্রে ইস্টার্ন স্ট্যান্ডার্ড সময়- নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটন, ডেট্রয়েট ও কিউবা

সকাল ৬টা: যুক্তরাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় মান সময়- শিকাগো

সকাল ৭টা: যুক্তরাষ্ট্রে মাউন্টেন স্ট্যান্ডার্ড সময়- কলোরাডো, অ্যারিজোনা

সকাল ৮টা: যুক্তরাষ্ট্রে প্যাসিফিক স্ট্যান্ডার্ড সময় - এলএ, নেভাদা

সকাল ৯টা: আলাস্কা এবং ফরাসি পলিনেশিয়া

সকাল ১০টা: হাওয়াই, তাহিতি এবং কুক আইল্যান্ড

সকাল ১১টা: আমেরিকান সামোয়া

দুপুর ১২টা: বাকার দ্বীপ, হাওল্যান্ড দ্বীপ

এদিকে, নিউ ইয়ার উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতি নিচ্ছে ব্রাজিল। প্রতি বছরের মতো এবারও দেশটির রিও ডি জেনেরিও শহরের সমুদ্র সৈকতে তৈরি হয়েছে বড় মঞ্চ। সৈকত ঘিরে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নতুন বছরকে বরণ করতে প্রদর্শিত হবে আতশবাজির খেলা।
 
নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যে নতুন বছর বরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে জার্মানি। চলতি মাসে দেশটির পূর্বাঞ্চলের ম্যাডেনবার্গ শহরের ক্রিসমাস মার্কেটে গাড়ি হামলায় হতাহতের ঘটনার পর কঠোর করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বার্লিনের ব্র্যান্ডেনবার্গ গেটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জড়ো হবেন প্রায় ৬৫ হাজার মানুষ। এ উপলক্ষে রাজধানীজুড়ে ৫ হাজার পুলিশ টহল দেবে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রশাসন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ভৌগোলিক কারণে সবার আগে নতুন বছর, ২০২৫-কে বরণ করবে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। জমকালো আয়োজন আর বর্ণিল আতশবাজির মধ্য দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে এরই মধ্যে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি।

নিউ ইয়ার উদযাপনে বর্ণিল সাজে সেজেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ার। সেখানে প্রায় ১০ লাখ মানুষের সমাগমের আশা করছে কর্তৃপক্ষ। সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি অনুকূলে আছে বলে নিশ্চিত করেছে নিউইয়র্ক পুলিশ।

রিও ডি জেনিরোর মেয়র এডুয়ার্দো পেস রয়টার্সকে বলেন, নিউ ইয়ার উদযাপন উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে সৈকতে পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। মিউনিসিপ্যাল ​​গার্ডও আমাদের সহায়তা করবে। উৎসবের পরিবেশ নির্বিঘ্ন করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। বাসিন্দারা যেন মনের আনন্দে নতুন বছরকে বরণ করে নিতে পারে।

জার্মানির বার্লিনেও চলছে নিউ ইয়ার উদযাপনের প্রস্তুতি। নিরাপত্তা জোরদারে শহরে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত ৫ হাজার পুলিশ।

চীনের বেইজিংয়ে ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে ফ্যাশন ও প্রযুক্তির থিমযুক্ত এক হাজারের বেশি লন্ঠন জ্বালানো হয়েছে। একে বছরের সবচেয়ে বড় লন্ঠন উৎসব বলা হচ্ছে। ব্যবসায়ে সমৃদ্ধি লাভের আশায় এমন আয়োজন।

ইংরেজি নতুন বছরে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। বিশ্বজুড়ে সমতা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।

NC
আরও পড়ুন